ধর্মতলা থেকে সরানো হবে না বাস স্ট্যান্ড। শুক্রবার বাস স্ট্যান্ড সরানো সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে এমনটাই জানিয়েছে রাজ্য সরকার। তার পরিবর্তে ভিক্টোরিয়া বাঁচাতে সেখানে মাল্টি লেভেল কার পার্কিং করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। এনিয়ে বিভিন্ন দফতরের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। তাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এভাবে দূষণের হাত থেকে ভিক্টোরিয়াকে বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: ১২ বছর আগে সুপ্রিম নির্দেশ, এবার সাঁতরাগাছিতে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড সরানোর ভাবনা রাজ্যের
শুক্রবার মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলার শুনানিতে আদালতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, মূল বাসস্ট্যান্ডকে রেখে ধর্মতলাকে সাজানো হবে। একটি সংস্থাকে এনিয়ে সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সেনাবাহিনী, পূর্ত দফতর, পুরসভা, কলকাতা মেট্রোসহ একাধিক দফতর বৈঠক করে সেখানে মাল্টি লেভেল কার পার্কিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বক্তব্য শোনার পর আদালত কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসেটর জেনারেলকে বৈঠক সংক্রান্ত নথি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকের কাছে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধকে বাঁচানোর জন্য ধর্মতলা থেকে বাস স্ট্যান্ড সরানোর দাবি তুলেছিলেন পরিবেশ কর্মীরা। সে সংক্রান্ত মামলায় ধর্মতলা থেকে বাসস্ট্যান্ড সরানোর পরামর্শ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তারপরেই ধর্মতলায় দূষণ এবং যানজট রুখতে তাৎপর হয় রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রের খবর, এই প্ল্যান তৈরি হতে সময় লাগবে তিন মাস। কিছুদিন আগেই রাজ্যের মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে পরিবহণ দফতর, পূর্ত, পরিবেশ, বিদ্যুৎসহ ৮টি দফতরের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ কমিশনার, মেট্রো, কেএমআরসিএল এবং আরভিএনএলের প্রতিনিধি ও সেনাকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সব দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়।
এর আগে রাজ্য সরকার আদালতে জানিয়েছিল, সাঁতরাগাছিতে ধর্মতলার বাস স্ট্যান্ড সরানোর পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এদিন রাজ্য আদালতকে জানিয়েছে বাসস্ট্যান্ড সরানো হবে না। এদিকে, আগামী দিনে তিনটি মেট্রো রুটের জংশন স্টেশন হতে চলেছে এসপ্লানেড। এরেফলে সেখানে মানুষের যাতায়াতের সঙ্গে যানবাহনের যাতায়াত বাড়বে। ফলে দূষণও বাড়বে। তা রোধ করার জন্য এই পার্কিং তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধকে বাঁচানোর জন্য ধর্মতলা থেকে বাস স্ট্যান্ড সরানোর দাবি তুলেছিলেন পরিবেশ কর্মীরা। সেই দাবির প্রেক্ষিতে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। পরে মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। দেশের শীর্ষ আদালত ধর্মতলা থেকে বাস স্ট্যান্ড সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল। ১২ বছর হয়ে যাওয়ার পরে সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে পুনরায় মামলা দায়ের করেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। সেই সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকার একথা জানিয়েছে।