বিচারবিভাগীয় অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া রায় খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এক প্রধান শিক্ষকের পদ অবনমন ঘটানোর রায় খারিজ করল বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। যার জেরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া একাধিক রায়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
রানিগঞ্জের গান্ধী মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা অপর্ণা মুন্সির বদলি সংক্রান্ত মামলায় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছবি কোনারকে অযোগ্য চিহ্নিত করে তাঁর পদ অবনমন ঘটান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগ অপর্ণাদেবীকে বদলির জন্য নো অবজেকশন দিচ্ছিলেন না ছবি কোনার। আদালতের বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে এই রায় দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন প্রধান শিক্ষিকা। সেই মামলায় আইনজীবী সপ্তাংশু বসুকে আদালত বান্ধব নিয়োগ করে ডিভিশন বেঞ্চ।
আদালতে সপ্তাংশুবাবু জানান, এই ধরণের মামলায় আদালতের বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার নজিরবিহীন। আদালত অবমাননার মামলায় বিচারপতি বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য আইন রয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে তা ব্যবহার করতে বলতে পারতেন বিচারপতি। তাছাড়া প্রধানশিক্ষকের পদ যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে পেতে হয়। এই পদ পদোন্নতির মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয়। যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যে পদ পেতে হয় তাতে পদ অবনমনের নির্দেশ দিতে পারে না আদালত।
২০১৮ সালে শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত নতুন আইন প্রণয়ন করে রাজ্য সরকার। তাতে কোনও শিক্ষক বা প্রধানশিক্ষক শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে তাঁকে সাসপেন্ড বা বহিষ্কারের সুযোগ রয়েছে, কিন্তু পদ অবনমনের সুযোগ নেই।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় খারিজ করে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এই রায়দানের ক্ষেত্রে আদালতের বিশেষ ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে। একজন বিচারপতি আবেগপ্রবণ হয়ে রায় দিতে পারেন না। তাঁর আইনের গন্ডির মধ্যে থেকে রায়দান করা উচিত।