আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কাশ্মীরের থেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী বাংলার জন্য চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই নিয়ে এখন জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই এবার ইডি অফিস ও অফিসারদের সুরক্ষায় বাড়তি জওয়ান চাওয়া হয়েছে। এখন ১৮০ জন জওয়ান ঘিরে থাকেন ইডি’র কলকাতার অফিসারদের। এবার আরও প্রায় ১৮০ জন অতিরিক্ত জওয়ান পেতে চলেছে ইডির কলকাতা অফিস বলে ইডি সূত্রে খবর। সন্দেশখালি গিয়ে ইডি অফিসারদের বেদম মার খেতে হয়েছিল। তারপর থেকেই সতর্ক হয়েছে ইডি। তাই অতিরিক্ত বাহিনী চাওয়া হয়েছিল গত শুক্রবার। সেই চাওয়ার প্রেক্ষিতেই অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং পরে কোনও বড় অভিযান চালাতে গেলে অতিরিক্ত বাহিনী প্রয়োজন হতে পারে। তাই বাড়ানো হচ্ছে মহিলা জওয়ানদের সংখ্যাও বলে সূত্রের খবর।
এদিকে গত ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে অভিযানে যায় ইডি। আর ইডির অফিসাররা সেখানে শেখ শাহজাহানকে ধরতে গিয়ে বেদম মারধর খান। এমনকী কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা পালাতে থাকেন মারধরের চোটে। এই হামলার ঘটনার পরে কলকাতায় আসেন ইডির ডিরেক্টর রাহুল নবীন। আর অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিষয়টি নিয়ে। সূত্রের খবর, আর ওই বৈঠকেই অতিরিক্ত দুই কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জানানো হয়েছিল। তারপর অবশ্য বেশ কয়েকটি অভিযান করে ইডি। কলকাতা এবং জেলায় ইডির অফিসাররা জোরকদমে অভিযানে নেমেছেন।
অন্যদিকে এই ইডির বিরুদ্ধেই এখন অভিযোগ তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক জেলা সফর থেকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ তুলেছেন, আজ সন্দেশখালিতে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা করেছে ইডি। তারপর সেখানে উসকানি দিয়েছে বিজেপি। সুতরাং মানুষজন এখন ইডি অফিসারদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছে। তাই মানুষের আক্রমণ নেমে আসতে পারে ইডি অফিসারদের উপর। হামলা হতে পারে ইডি অফিসে। এই ভয় থেকেই এখন বাড়তি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে ইডি। আর তা মান্যতা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, অধ্যাপক নিয়োগে কড়া চিঠি ইউজিসি’র
এছাড়া ইডি অফিসাররা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জানিয়েছেন, সন্দেশখালি অনেক শিক্ষা দিয়েছে। কারণ সন্দেশখালিতে অভিযানে গিয়ে অফিসারদের প্রায় দেড় হাজার মহিলা ও পুরুষ লোহার রড ও কাঠের ডান্ডা দিয়ে হামলা করেন। তাতে একজনের মাথা পর্যন্ত ফেটেছে। এখনও সন্দেশখালিতে উত্তেজনা রয়েছে। শেখ শাহজাহানকে ধরা যায়নি। পুলিশ এবং ইডি কেউ ধরতে পারেনি। এই হামলার ঘটনার পরে হেলমেট, লাঠি, ঢাল, কাঁদানে গ্যাস এবং আধুনিক রাইফেল, শটগান জওয়ানদের সঙ্গে রাখার নির্দেশ জারি হয়েছে। এখন সিজিও কমপ্লেক্স এবং অফিসারদের নিরাপত্তা, তল্লাশির জন্য এক কোম্পানি সিআইএসএফ ও এক কোম্পানি সিআরপিএফ আছে। চলতি সপ্তাহে আরও দুই কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী কলকাতায় যোগ দেবে। সেখানে থাকবেন ৪০ থেকে ৪৫ জন মহিলা জওয়ান।