বাংলায় আবাস যোজনার টাকা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে রাজ্য সরকার সরব হলেই বিজেপি দাবি করছে, দুর্নীতি হয়েছে তাই টাকা আটকে আছে। আর এবার বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশেই আবাস যোজনা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। আর এই 'অনিয়মের' বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছে সিএজি। মধ্যপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সিএজি রিপোর্টে। আর তাই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে খোঁচা মারলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, 'এবার তাহলে মধ্যপ্রদেশেরও টাকা বন্ধ করবে কেন্দ্রীয় সরকার?' (আরও পড়ুন: '১০ বছর মিথ্যা বলে এখন খুন করছে BJP', আন্দোলনকারী কৃষকের মৃত্যুতে তোপ মমতার)
সম্প্রতি সিএজি রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস দাবি করে, অন্তত দেড় হাজার 'অযোগ্য' ব্যক্তির কাছে আবাস যোজনার ১৫ কোটি টাকা গিয়েছে। এছাড়া আরও ৮০০০ ব্যক্তিকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে আবাস যোজনার প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এর জেরে প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তফসিলি জাতি-জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত গ্রামবাসীরা। আর এই অভিযোগ সামনে আসতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দাগেন বিজেপিকে। এক সংবাদমাধ্যমকে এই নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাকে যে রাজনৈতিক কারণে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে, তা প্রমাণিত হল এই ঘটনা থেকে।
এদিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই সিএজি রিপোরর্টিটি পেশ করা হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের বিধানসভায়। তাতে বলা হয়, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় ২৪ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে মধ্যপ্রদেশে। এই প্রকল্পের আওতায় সেই রাজ্যে তৈরি হয়েছে ২৬ লাখ ২৮ হাজারেরও বেশি পাকা বাড়ি। লক্ষ্যমাত্রার থেকে এই সংখ্যা ৮২ শতাংশেরও বেশি। তবে এই ২৬ লাখ বাড়ির মধ্যে থেকে প্রায় ১৫০টি ক্ষেত্রে নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে। কীভাবে ভাঙা হয়েছে নিয়ম? রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৬৪টি ক্ষেত্রে একই ব্যক্তি দু’বার আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন। এছাড়া ৯৮টি ক্ষেত্রে একই পরিবারের দুই পৃথক ব্যক্তি ওই প্রকল্পে অর্থসাহায্য পেয়েছেন। যা নিয়মের লঙ্ঘন। এছাড়া নিয়ম বলছে, দুই-তিন-চার চাকার গাড়ি বা নৌকার মালিকেরা ওই প্রকল্পের প্রাথমিক সুবিধাভোগী হতে পারেন না। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে সেই নিয়ম মানা হয়নি বলে হয়েছে বলে দাবি সিএজি রিপোর্টে। উল্লেখ্য, ২০১৬ থেকে ২০২১ সময়কালের মধ্যে মাঝে কিছু সময় কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল সেই রাজ্যে (২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত)। তাছাড়া এই সময়কালের মধ্যে বাকি প্রায় সাড়ে তিন বছর মধ্যপ্রদেশের মসনদে ছিল বিজেপি।