ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে পরাজয় বিজেপির। একুশের নির্বাচনে জেতা আসন উপনির্বাচনে হাতছাড়া হয়ে গেল। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সামনে রেখে ভোট হল। গণনার ক্ষেত্রেও তাই। তারপরও তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে শোচনীয় পরাজয়। এমনকী বাম–কংগ্রেসের ভোট ট্রান্সফারও বাঁচাতে পারল না বিজেপিকে। অর্থাৎ ধূপগুড়ির মানুষ রাজনৈতিক প্রত্যাখ্যান করল বিজেপিকে। শুক্রবারের এই ফলাফল দেখে বেজায় চটেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেন এমন পরাজয় ঘটল? জানতে আজ, শনিবার রাজ্যে আসছেন বিএল সন্তোষ। পরাজয়ের কারণ খুঁজতে দু’দিন ধরে চলবে বৈঠক।
এদিকে এটা বিজেপির কাছে বড় সেটব্যাক সেটা ফলাফলের পরই স্পষ্ট বোঝা গেল। এই পরাজয় নিয়ে একটি শব্দও খরচ করতে দেখা যায়নি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। কার্যত মুখ লুকিয়ে কাটিয়েছেন তাঁরা। এবার কেন্দ্রীয় নেতার সামনে মুখ লুকিয়ে পালানো সম্ভব নয়। সেখানে জবাবদিহি করতে হবে বলে সূত্রের খবর। ধূপগুড়িতে ত্রিমুখী লড়াই হল। তৃণমূল কংগ্রেসের নির্মলচন্দ্র রায়, বিজেপির তাপসী রায় এবং বাম–কংগ্রেস জোটপ্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়ের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও ফলাফল বুঝিয়ে দিয়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রভাব পড়বে।
অন্যদিকে এই কথাটি বুঝতে পেরেই তড়িঘড়ি বাংলায় আসছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা বিএল সন্তোষ। এবার আর কোনও নোট পাঠানো বা চিঠি পাঠিয়ে রিপোর্ট তলব করা হল না। এসব অনেক হয়েছে। তাতে যে কাজের কাজ কিছুই হয়নি সেটা বুঝতে পেরেছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এই পরাজয় স্পষ্ট করেছে গ্রামাঞ্চল ও চা বলয়ের ভোট পায়নি বিজেপি। তাই ফলাফল দাঁড়িয়েছে— তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের প্রাপ্ত ভোট মোট ৯৬,৯৬১। বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায়ের ৯২,৬৪৮ প্রাপ্ত ভোট। অনেক পিছিয়ে মাত্র ১৩,৬৬৬ ভোট পেয়েছেন বাম–কংগ্রেস জোট প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়। অর্থাৎ ৪৩১৩ ভোটে জিতেছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।
আরও পড়ুন: পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি অধীর চৌধুরীর, বহরমপুরে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ধুন্ধুমার
আর কী জানা যাচ্ছে? তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে ধূপগুড়ি উপনির্বাচন ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। আর বিজেপির কাছে ছিল আসন ধরে রাখার লড়াই। বাম–কংগ্রেস জোট প্রার্থী চেয়ে ছিলেন দুই যুযুধান প্রতিপক্ষের লড়াইয়ে তিনি বাজিমাত করে দেবেন। সেখানে সব অঙ্ক ফেল করে গিয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে প্রচারে এসে মহকুমা গড়ার কথা বলাটাই চেঞ্জ ফ্যাক্টর বলে মনে করছে বঙ্গ–বিজেপি নেতৃত্ব। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার ধূপগুড়িতে পড়েছিলেন। তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায়ের হাতে পদ্ম পতাকা ধরিয়ে দিয়ে চমক দিয়েছিলেন সুকান্ত। তবে তা সত্ত্বেও পদ্মফুল ফুটল না। বরং ফুটল ঘাসফুলই। তাই ধূপগুড়ি পরাজয়ের কারণ খুঁজতে তড়িঘড়ি বাংলায় আসছেন শাহী দূত বিএল সন্তোষ।