তাঁকে ‘গুন্ডা’ বলে আক্রমণ করায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে শালীনতার পাঠ দিলেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ওই মন্তব্যের জন্য সোমবারই অভিষেকবাবুকে আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন দিলীপবাবুর আইনজীবী। তবে বিজেপি রাজ্য সভাপতির দাবি, আইন দিয়ে মানুষকে বদলানো যায় না। সঙ্গে তিনি বলেন, এই ধরনের রাজনীতি হওয়া উচিত কি না তা সমাজ ঠিক করবে।
সোমবার বিকেলে এক সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপবাবুর প্রশ্ন, ‘রাজনীতিতে কত মিথ্যাচার হওয়া উচিত, কত আশালীন হওয়া উচিত, কত নীচে নামা উচিত’?
এর পরই তিনি বলেন, ‘কাল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার সম্পর্কে যে ধরনের শব্দ প্রয়োগ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে সিপিএম একসময় এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করে নিজের সর্বনাশ ডেকে এনেছিল। তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড, একপ্রকার ভবিষ্যতের মালিক, তিনি একজন সাংসদ সম্পর্কে, বিরোধী দলের সভাপতির সম্পর্কে এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করছেন’।
আইনি পদক্ষেপ করে কারও ভাবনা চিন্তা বদলানো যায় না বলে দাবি করে দিলীপবাবু বলেন, ‘আইন কানুন তো ঠিক আছে। কিন্তু আইন দিয়ে তো সব ঠেকানো যায় না। মানুষের একটু নিজের বুদ্ধি-বিদ্যে থাকা উচিত, একটু সংস্কার থাকা উচিত, সৌজন্য থাকা উচিত। সেটা আমরা আশা করি’।
সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘আইন দিয়ে জোর করে কাউকে বলানো যায় না। মানানো যায় না। খুব বেশি হলে ২ দিন জেলে পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু ওদের কাছ থেকে সমাজ সৌজন্য দেখতে চায়, শিখতে চায়। এর থেকে ওদের কালচার ওরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন’।
এর পরই অভিষেককে সৌজন্যের পাঠ পড়িয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘আইন একটা ফরমালিটি। আইনের পথে কিছু করা উচিত। নইলে মানুষ ভাববে এরা সব মেনে নিচ্ছে। রাজনৈতিক নেতা হিসাবে প্রকাশ্যে কিছু বলছেন তখন ভেবে চিন্তে বলা উচিত। সৌজন্যের সঙ্গে বলা উচিত।
পাশাপাশি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও খণ্ডন করেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, ‘আমি তো সব কিছুর উত্তর দিতে রাজি আছি চৌরাস্তায়। আজকে আমাকে যে মাফিয়া বলছে সে সাত কোটির বাড়িতে থাকে। একবার সাংসদ হয়ে সাত কোটি টাকার বাড়িতে থাকতে পারেন। তার অন্যান্য খরচ, জীবন যাত্রা দেখলে বোঝা যায় কে মাফিয়া। তিনি সমাজকে কী দিয়েছেন’?
পালটা অভিষেককে গুন্ডা বলে দাবি করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘যার লোকেরা চৌরাস্তায় লোকেদের পেটাচ্ছে। নির্বাচন করতে দেয় না। নমিনেশন করতে দেয় না। তার এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে সাতটা বিধানসভার মধ্যে একটা নমিনেশন করতে দেয়নি। তো গুন্ডা কে’?
অভিষেক অনুচিত বলেছেন কি না তা নির্ধারণের দায়িত্ব সমাজের ওপরেই ছেড়েছেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘এটা সাধারণ মানুষের বিচার্য বিষয়। আমরা জোর করে কারও মুখ বন্ধ করতে পারব না। সম্ভবও নয়। সমাজের ভাবা উচিত এই ধরনের রাজনীতি হওয়া উচিত কি না’।