আজ সকাল সকাল তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে হানা দিল ইডি। শাসকদলের এই বর্ষীয়ান নেতা বরানগরের বিধায়ক সেই ২০১১ সাল থেকে। তিনি দলের দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতিও বটে। এই আবহে আজ সকালে বউ বাজারে তাপস রায়ের ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় ইডি। বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে যে আবাসনে তাপসবাবু থাকেন সেখানে সাত সকালে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। আসাবসেন মূল ফটক তখনও বন্ধ। পরে ডাকাডাকির পর খোলা হয় গেট। এদিকে উত্তর দমদম পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সলির সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতেও আজ হানা দিয়েছে ইডি। বিরাটির খলিসাকোটা পল্লীতে তাঁর বাড়ি। এর আগে উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন সুবোধ। এদিকে শুধু তাপস রায়, বা কাউন্সিলর সুবোধই নয়, আজ সকালে রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতেও হানা দিয়েছে ইডি। (আরও পড়ুন: কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে অভিযানে ইডি, হানা মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতে)
উল্লেখ্য, পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বরানগর পুরসভার ওপর আগেই নজর পড়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের। পুরসভার শিক্ষক, ক্লার্ক, গাড়িচালক মিলিয়ে এর আগে ৩২ জনকে তলব করেছিল সিবিআই। সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল বরানগরের পুরপ্রধান অপর্ণা মৌলিককেও। গতবছর ইডির জেরার মুখে পড়েছিলেন তিনি। আর আজ বরানগরের বিধায়কের বাড়িতে হানা দিল ইডি।
অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষা দুর্নীতির ধাঁচেই পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছিল বরানগর পুরসভায়। নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআর শিট কারচুপি হয়েছিল। এবং তার প্রমাণও হাতে আসে তদন্তকারীদের। অভিযোগ, ওএমআর শিটে চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছিল বরানগর পুরসভায়। এই আবহে সুমন চৌধুরী নামে এক চাকরিপ্রার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ্যে এসেছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল, পরীক্ষায় তিনি ১৯ নম্বর পেলেও মেধাতালিকায় তা বেড়ে হয়েছিল ৩১। সেই তালিকায় সই ছিল বরানগর পুরপ্রধানের। প্রকাশ্যে আসা ওএমআর শিট অনুসারে, ২০১৩ সালের ১২ অগাস্ট বরানগর পুরসভায় মজদুর পদের জন্য লিখিত পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষায় বসেছিলেন সুমন চৌধুরী নামে এক যুবক। প্রশ্নপত্রে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ১৯ নম্বর পান তিনি। সেই ওএমআর শিটে অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজোনের সিল ও তার আধিকারিকের সই রয়েছে। কিন্তু মেধাতালিকায় দেখা যায় তিনি পেয়েছেন ৩১। সেই তালিকায় আবার পুরপ্রধানের সই রয়েছে পুরপ্রধানের। এদিকে পরীক্ষায় যে সুমন ১৯ পেয়েছিলেন, তাও উল্লেখ করা ছিল তালিকায়। জানা গিয়েছে, বিগত বছরগুলিতে দু'বার বরানগর পুরসভার নিয়োগপ্রক্রিয়া পরিচালনার দায়িত্বে ছিল অয়ন শীলের সংস্থা।