এখন লোকসভা নির্বাচনের আবহে বাংলার মাটি সরগরম। আর তার মধ্যেই রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপালের সংঘাতের আবহ অব্যাহত রয়েছে। ‘ইস্যু’ একটাই—তা হল রাজ্যের একাধিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ। তা নিয়েই যত ঝামেলা। আজ, শনিবার এই উপাচার্য সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ বৈঠকে বসছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানির সঙ্গে বৈঠকের পরই আজ উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যপাল। ইতিমধ্যেই ৬ জনের নামে অনুমোদন দিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস। এবার উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করবেন আচার্য।
এদিকে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবন বনাম নবান্নের বহুদিন ধরেই বিবাদ চলছে। রাজ্যপাল বিবৃতি দিচ্ছেন কড়া ভাষায়। পাল্টা আরও কড়া ভাষায় মন্তব্য করছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, মামলা গড়ায সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। তবে সেখানে রাজ্যপালের কথা খাটেনি। বরং রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধান করতে বলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তখন জটিলতা কাটাতে মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসেন দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি। রাজ্যের তালিকা থেকে ৬ জন উপাচার্যকে নিয়োগের নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ। একসপ্তাহের সময়সীমা বেধে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
আরও পড়ুন: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে বড় ঘোষণা, এবার রায় দেবে কলকাতা হাইকোর্ট
অন্যদিকে আজ, শনিবার আচার্য সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে সাতজনকে। সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছেন সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অনুরাধা মুখোপাধ্যায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অমিতাভ দত্ত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্ত, বিদ্যাসাগর এবং নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী–সহ কয়েকজন। কয়েকজন আবার রাজভবনের এই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন বলেও সূত্রের খবর।
এছাড়া উপাচার্য নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকার প্রস্তাবিত ৩১ জন অধ্যাপকের তালিকার মধ্যে সিভি আনন্দ বোস ৬টি নাম গ্রহণ করেন। বাকি নামে অনুমোদন মেলেনি। যদিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে আসতেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, ‘৬ দিয়ে শুরু হয়েছে। নিশ্চিতভাবে ৩১–এ গিয়ে থামবে। আশা করি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রাজভবনের অন্দরে শুভ বোধের জাগরণ ঘটাবে।’ আবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ব্রাত্য বসু লিখেছেন, ‘যদি রাজ্যের সুপারিশ করা নামগুলির মধ্যে কয়েকটি নাম আচার্য ইতিমধ্যেই বাতিল করে থাকেন, তাহলে তাঁর উচিত রাজ্য সরকারের কাছে আরও কিছু নাম চাওয়া। অ্যাটর্নি জেনারেলের অবস্থান, যা সুপ্রিম কোর্ট বহাল রেখেছে, সেই অবস্থানকে আমি সমর্থন করছি।’