বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে বিচারাধীন প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা স্থানান্তর করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে একথা জানা গিয়েছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে বিচারাধীন যাবতীয় মামলা বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবারই উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা থেকে অব্যহতি নিয়েছেন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেন।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলাগুলি সরানোর জন্য সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে আবেদন করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী। তবে এব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এক্তিয়ারে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়ে দেয় সাংবিধানিক বেঞ্চ। তার পরদিনই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরল যাবতীয় মামলা।
গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বিচারপতি সৌমেন সেনের মধ্যে নজিরবিহীন সংঘাত বাঁধে। বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতার মতো কাজ করার অভিযোগ তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকী বিচারপতি সেন বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে নির্দেশ দেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিযুক্ত করে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির যে ২টি মামলা তাঁর এজলাসে বিচারাধীন রয়েছে সেগুলি যেন তিনি খারিজ করে দেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সাত তাড়াতাড়ি ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করে শনিবার ছুটির দিন মামলাটির শুনানি করে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার মামলার ফের শুনানিতে মেডিক্যালে সংরক্ষিত আসনে অসংরক্ষিত প্রার্থী ভর্তির মামলায় বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ ও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সমস্ত নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে এই মামলার বিচারের ভার নিজেদের হাতে নিয়ে রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচার্য বিষয় বদলের যে দাবি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে করা হয়েছিল তার ওপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ওপর দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার ওই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন বিচারপতি সেন। তিনি বলেন, ‘আদালতের অপমান হয়েছে।’ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, ‘এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য আমি দুঃখিত ও লজ্জিত।’