কামদুনিকাণ্ডে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড মকুব ও মুক্তির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে নির্যাতিতার পরিবারের দায়ের করা মামলায় জেল থেকে মুক্তিপ্রাপ্তদের ওপর নতুন শর্ত আরোপ করল সুপ্রিম কোর্ট। তবে তাদের ফের গ্রেফতারির আবেদনে সাড়া দেয়নি সর্বোচ্চ আদালত।
কামদুনিকাণ্ডে মুক্তিপ্রাপ্ত দোষীদের ফের জেলবন্দি করার দাবি জানিয়ে বুধবারই সুপ্রিম কোর্টে SLP দায়ের করেছিল নির্যাতিতার পরিবার। সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট জানায়, যেহেতু মামলার শুনানি শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই দোষীরা জেলের বাইরে থাকলে সাক্ষপ্রমাণ নষ্ট করতে পারেন এই যুক্তি অপ্রাসঙ্গিক। তাদের আর জেলবন্দি করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন বলে স্বীকার করে নিয়েছে আদালত।
নির্দেশে বিচারপতি জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা রাজারহাট থানা এলাকার বাইরে যেতে গেলে ওসির আগাম অনুমতি নিতে হবে। মাসের প্রথম ও তৃতীয় সোমবার থানায় হাজিরা দিতে হবে মুক্তিপ্রাপ্ত ৩ জন দোষী ও ১ অভিযুক্তকে। তাদের কারও কাছে কোনও পাসপোর্ট থাকলে তা জমা দিতে হবে। পুলিশকে তাদের বর্তমান ঠিকানা জানাতে হবে। কখনও ঠিকানা পরিবর্তন করলে তা আগাম জানাতে হবে থানাকে। ৪ জনের প্রত্যেককে তাদের ফোন নম্বর পুলিশকে জানাতে হবে।
কামদুনি কাণ্ডে নিম্ন আদালতে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ৩ জনের মধ্যে ১ জনকে বেকসুর খালাস করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বাকি ২ জনের ফাঁসির সাজা রদ করে আজীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে। এছাড়া আজীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ৩ দোষীর সাজা কমিয়ে ৭ বছর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। যার ফলে জামিনে মুক্তি পেয়েছে তারা। কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে জনমানসে। নিহত ছাত্রীর পরিবারের দাবি, রাজ্য সরকারের গাফিলতিতেই সুবিচার পাননি তাঁরা।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কামদুনির অন্যতম প্রতিবাদী মৌসুমী কয়াল বলেন, আদালতের ওপর থেকে ভরসা উঠে গেছে। তবু আদালতে যাওয়া ছাড়া তো আর উপায় নেই। আমরা দোষীদের ফাঁসিকাঠে পৌঁছে দিতে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যাব।