খাস কলকাতায় বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বিজেপি নেতার বাড়ির একাংশ বলে অভিযোগ। যদিও ওই অংশটি বেআইনি বলেও পাল্টা অভিযোগ রয়েছে। উত্তর কলকাতার স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক এবং কাউন্সিলরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি। বিডন স্ট্রিটে বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হয় বিজেপি নেতা সুনীল সিংয়ের বাড়ির একাংশ। আর এই ঘটনা নিয়ে কলকাতা পুরসভায় বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের মধ্যে মারপিঠ পর্যন্ত হয়ে গেল। ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়ে কলকাতা পুরসভা ভবন। শনিবারের পুর অধিবেশন তপ্ত হয়ে উঠেছে।
এদিকে আজ, শনিবার কলকাতা পুরসভায় তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরদের সঙ্গে কার্যত হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন বিজেপি কাউন্সিলররা। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দিয়ে হামলা চালিয়েছে বিজেপি। পাল্টা বিজেপি বলছে, তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলররাই মারধর করেছেন তাঁদের। এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি আজ বিক্ষোভ দেখায়। তার পর তাঁরা কলকাতা পুরসভার ভিতরেই সাংবাদিক বৈঠক করেন বলে অভিযোগ। তখন সেটার প্রতিবাদ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলররা। এরপর কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সেন মালা রায় অভিযোগ করেন, ‘পুরসভার মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিজেপি নেতারা সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন না। কারণ, এটা কোনও রাজনৈতিক দলের অফিস নয়। আমরা সেটা বলতে গেলে আমাদের ধাক্কাধাক্কি করেন বিজেপির নেতারা।’
অন্যদিকে পুরসভার অধিবেশনের শেষে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বিষয়টি তোলেন। কিন্তু চেয়ারপার্সন মালা রায় তাঁকে জানান, অধিবেশনে এই নিয়ে আলোচনা করা যায় না। প্রয়োজনে মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তখন সজল পাল্টা মানবিকতার কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন। সজল ঘোষ বলেন, ‘এভাবে কোনও নাগরিকের বাড়ি ভেঙে দেওয়া যায় না। দয়া করে মানবিকতার খাতিরে বিষয়টি দেখুন।’ মেয়র ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বিজেপি কাউন্সিলরদের সঙ্গে চেম্বারে কথা বলবেন বলে জানান। কিন্তু বিজেপি কাউন্সিলররা ধৈর্য্য না ধরে কাউন্সিলর ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করে দেন। সেখানে বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝা, মীনাদেবী পুরোহিত এবং সজল ঘোষ ছিলেন।
আরও পড়ুন: সাংসদ আলুওয়ালিয়ার বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ, দায়ের করলেন বিজেপি নেতা
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন সেখানে আসেন তৃণমূল কাউন্সিলর মহেশ শর্মা। তিনি প্রশ্ন করেন, কাউন্সিলর ক্লাব কাউন্সিলরদের জন্য। সেখানে বিজেপির জেলা সভাপতি কী করে সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন! পাল্টা সজল ঘোষরা তেড়ে গিয়ে বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকেই করদাতা। সুতরাং সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করার অধিকার সকলেরই আছে।’ জোর বচসার মধ্যে কাউন্সিলর ক্লাবে চলে আসেন বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত, অসীম বসু, রাজীব দাস, কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়–সহ একের পর এক তৃণমূল কাউন্সিলররা। তখন দু’পক্ষের কার্যত মারপিঠ বেধে যায়। তখন বিজেপির কয়েকজন নেতার নিরাপত্তায় থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরদের ধাক্কাধাক্কি করেন বলে শাসকদলের অভিযোগ। একে–৪৭ রাইফেল দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় জওয়ানরা বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার পর তৃণমূল কাউন্সিলররা মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং চেয়ারপার্সন মালা রায়ের দ্বারস্থ হন।