করোনা আবহে ঘোষণা করা হয়েছিল—অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা। এবার পরিস্থিতি অনেকটা বদল হয়েছে বলে মনে করছেন গিল্ড কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া এখন করোনা টিকা এসে গিয়েছে। তাই বইমেলার উদ্যোক্তা গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বইমেলা এবার হবেই। নির্বাচনের পর বইমেলার শেষ অথবা জুলাই মাসের শুরুতেই আমরা বইমেলার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তাঁর দাবি, জুন–জুলাই মাসে পরিস্থিতি ততদিনে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তখন বইমেলা করতে মনে হয় না খুব অসুবিধে হবে।
পশ্চিমবঙ্গে জুন–জুলাই মাসে সক্রিয় থাকে বর্ষা। সেক্ষেত্রে বইপ্রেমীদের তো অসুবিধা হবে? জবাবে ত্রিদিববাবু বলেন, ‘বিদেশের বইমেলা যেমন হয় ঠিক সেই ধাঁচে এবারের কলকাতা বইমেলা করব আমরা। সেখানে থাকবে এসি হ্যাঙার। মাঠের ভেতরে ছাউনি এবং সেখানেই বুকস্টলগুলি থাকবে। ফলে বৃষ্টি কিংবা রোদে বইপ্রেমীদের কোনও অসুবিধা হবে না।’ বইমেলার জন্য রাজ্য সরকার যানবাহনের ব্যবস্থাও করে। সেই যানবাহনের মাধ্যমে একবার মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারলেই নিশ্চিন্ত।
এসি হ্যাঙার হল, বইমেলায় আয়োজনে একটি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত অস্থায়ী পরিকাঠামো। প্রতিবছর ইংরেজি প্রকাশনীর স্টলগুলির জন্য দুই–তিনটি এসি হ্যাঙার থাকে। এবারে পুরো মাঠ জুড়েই তৈরি করা হবে এই ধরনের হ্যাঙার। তবে বইমেলায় আসা জনতাকে কড়া কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে। প্রবেশ এবং প্রস্থান দুটি গেট আলাদা করা হবে। সেখানে ঢোকা থেকে বাইরে বেরোনো পর্যন্ত থাকছে এই অস্থায়ী পরিকাঠামো। তাতে মানুষ অনেকটা স্বস্তিবোধ করবেন। থাকছে স্যানিটাইজার এবং বিনামূল্যে মাস্ক দেওয়ার ব্যবস্থাও। দূরত্ব–বিধি বজায় রাখার জন্য ঘোষণার পাশাপাশি পুলিশ–প্রশাসনকে বেশি করে রাখা হবে।
তবে সূত্রের খবর, বইমেলা নিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে হোয়াটসঅ্যাপ, ই–মেইল এবং ফোনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়া হবে। মানুষের কাছে ওপেন ফোরামে প্রশ্ন রাখা হবে, কোন সময় বইমেলা হলে সুবিধা হয়? ঠিক কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে? এই পরিস্থিতিতে বইমেলা কেমন হতে পারে? তারপর পরের বছর থেকে মানুষের রায় মেনেই হবে বইমেলা। যা আগে কখনও হয়নি।