সম্পূর্ণ নিজের খরচে শবর শিশুদের জন্য অবৈতনিক আবাসিক বিদ্যালয় চালিয়ে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন কলকাতা পুলিশের কনসটেবল অরূপ মুখোপাধ্যায়। ‘ব্রাভো ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড’ নামে এক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
পুরুলিয়ার পুঞ্চায় শবর শিশুদের জন্য একটি অবৈতনিক বিদ্যালয় চালান অরূপবাবু। সম্পূর্ণ নিজের খরচে এই বিদ্যালয়ের ১২৬ জন পড়ুয়ার শিক্ষা ও ভরণপোষণের দায় বহন করেন তিনি। সেজন্য এখনো কোনও সরকারি স্বীকৃতি না জুটলেও বেসরকারি সম্মান পেয়েছেন বেশ কিছু। এবার পেলেন আন্তর্জাতি স্বীকৃতি।
বাবা ছিলেন পুলিশকর্মী। ছোটবেলায় নিজে চোখে দেখেছেন শবর পরিবারগুলির ওপর সমাজের অত্যাচারের ছবি। কীভাবে চোর-ডাকাত তকমা দিয়ে হেনস্থা করা হত পরিবারের সদস্যদের। এমনকী পিটিয়ে মারার ঘটনাও বিরল নয়। ঠিক করেছিলেন চাকরি পেয়ে শবরদের জন্য একটি স্কুল খুলবেন তিনি। সেখানে শবর শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে আগামীতে আলোর পথ দেখাবেন।
১৯৯৬ সালে কলকাতা পুলিশে চাকরি পেয়ে পুরুলিয়ার পুঞ্চায় ‘নবদিশা মডেল স্কুল’ চালু করেন তিনি। সেখানে শিশুদের পঠনপাঠনের পাশাপাশি ভরণপোষণের ভারও নেন তিনি। বর্তমানে সেখানে ১২৬টি শবর শিশু পড়াশুনো করে। সন্তানরা স্কুলে যাওয়ায় অপরাধমনস্কতা কমেছে শবরদের মধ্যে, এমনটাই জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
প্রাথমিকের পাঠ শেষ করে স্থানীয় স্কুলেই মাধ্যমিক স্তরে ভর্তি হয় শবর শিশুরা। এগিয়ে যায় উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে। এভাবেই গত প্রায় ২৫ বছর ধরে পুঞ্চায় চলছে শবর সমাজের উত্থানের কাহিনী। যার নেপথ্য নায়ক অরূপবাবু নিজে।