যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় সম্প্রতি রিপোর্ট পেশ করেছে অভ্যন্তরীণ কমিটি। তাতে বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে। এবার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পেতে চাইছেন। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠছে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ সাবার্বান ডিভিশন) বিদিশা কলিতা খোদ এই কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের কাছে কোনও রিপোর্ট চাওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: Jadavpur Ragging: র্যাগিং হত সুপারের ওপরেও, স্যারেদেরও রেয়াত করত না যাদবপুরের ‘দাদারা’
কলকাতা পুলিশ গত ৩ দিনে বেশ কয়েকজন আবাসিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাতে যেমন কারা কারা জড়িত? সে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছে পুলিশ, তেমনি কী মভাবে তথ্য প্রমাণ লোপাট করা হয়েছিল সেই বিষয়টিও পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটি যে রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় জমা করেছে, তাতে ১১৫ জন হস্টেল আবাসিকের একটি তালিকা রয়েছে। একইসঙ্গে, ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, কীভাবে ছাত্রদের উপর র্যাগিং করা হতো এবং সিনিয়াররা কীভাবে জুনিয়াদের উপর অত্যাচার করত? সেই সমস্ত তথ্য কমিটির রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে।
কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, র্যাগিংয়ের দিক থেকে সবচেয়ে কুখ্যাত ছিল হস্টেলের এ ২ ব্লকটি। রিপোর্টে ওই ব্লককে ‘মোস্ট নটোরিয়াস’, ‘ফিয়ার-সাইকোসিস’ বা ভয়ের কেন্দ্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়া, বেশ কয়েকজন সিনিয়র আবাসিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। এছাড়া, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার দিন হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ খুলে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার দিন প্রাক্তনীদের দফায় দফায় জেনারেল বোর্ডের বৈঠক হয়েছিল। সে বিষয়টিও উল্লেখ করা রয়েছে রিপোর্টে।
ইতোমধ্যে এ ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার মধ্যে বেশ কয়েকজন রয়েছে প্রাক্তনী। রিপোর্ট পেলে সেক্ষেত্রে তাদের তদন্ত অনেকটা এগিয়ে যাবে। ফলে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্ভব হবে মনে করছে পুলিশ। এদিকে, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই ৮৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে। তবে যাদবপুরের তদন্ত কমিটি ১৪৫ জনের সঙ্গে কথা বলেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। সেক্ষেত্রে এই রিপোর্ট নিঃসন্দেহে তদন্তের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে বলেই মনে করছে পুলিশ। তাই তদন্তকারীরা এই রিপোর্ট হাতে পেতে চাইছেন।