গত শুক্রবারই বিজেপি সংস্রব ত্যাগ করেছেন মুকুল রায়। ফিরে গিয়েছেন চেনা জায়গা তৃণমূল কংগ্রেসে। এটা বিজেপির কাছে বড় সেটব্যাক। তাই এখন বিজেপি নেতারা নানা কটাক্ষের সঙ্গে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। কেউ বলছেন, চর্বি ঝড়ে গেলে ভাল হয়। কেউ বলছেন, কোনও কোনও নেতা বিরোধী আসনে থাকতে পারেন না। এবার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন মুকুল রায়ের দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর। সুকৌশলে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ককে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘মুকুল দা কোনওদিনই ভোটে জেতেননি। বিজেপিই বিধায়ক করেছিল।’
মুকুল রায় বরাবরই সংগঠনের লোক। এটা রাজ্য–রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতির সবাই জানেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ১৮টি আসনের পেছনে মুকুল রায়ের ভূমিকা দেখেছেন বিজেপির সকল নেতারাই। কিন্তু এখন তিনি বিজেপিকে বিপাকে ফেলে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরেছেন। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘মুকুল রায় কোনওদিনও ভোটে জেতেননি। ২০০১ সালে জগদ্দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সফল না হওয়ায় তারপর আর লড়াইয়ের ময়দানে দেখা যায়নি তাঁকে। ২০ বছর পর বিজেপি ওঁকে টিকিট দিয়ে জিতিয়েছেন। কৃষ্ণনগর উত্তর আসনে বিজেপির অবস্থা বেশ ভাল। ওখানে কোনও বুথ সভাপতি লড়াই করলেও জয়ী হতেন।’ আসলে বিজেপির এখন বহু নেতা–নেত্রীই বেসুরো গাইছেন। তার মধ্যে বেশ কয়েকজন বিধায়কও রয়েছেন। তাঁদেরকে বার্তা দিতেই এই মন্তব্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আজ তড়িঘড়ি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী–সহ কয়েকজন বিধায়ক। ইতিমধ্যেই একাধিক বিজেপি নেতা বেসুরো হয়ে তৃমমূল কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকেছেন। আর তাতেই কপালে ভাঁজ ফেলেছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার। কারণ এভাবে সবাই চলে যেতে শুরু করলে শুভেন্দু অধিকারী একঘরে হয়ে পড়বেন। বড় ভাঙনের আশঙ্কাও করছে বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও নিজের উদ্বেগের কথা চেপে রেখে তিনি ফেসবুক পোস্টে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বেড়ে চলা হিংসার ঘটনা–সহ রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বিধায়কদের একটি প্রতিনিধিদল আজ বিকেল ৪টেয় রাজভবনে মাননীয় রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।’