মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে নানা ফরমান জারি হচ্ছে। আর তাতে বিরক্ত হয়ে উঠছেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা। এক তো ছাত্রছাত্রীরা কোনও ঘড়ি, মোবাইল–সহ কিছু সঙ্গে রাখতে পারবে না। তার উপর পরীক্ষা সময় এগিয়ে আনা হয়েছে। আবার শিক্ষক–শিক্ষিকা কম থাকায় জেলার দিকে অন্য স্কুলে গিয়েও গার্ডের ভূমিকা নিতে হবে। এই আবহে আবার নতুন ফরমান যুক্ত হয়েছে। সেটি হল— এবারের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার খাতা একই সময়ে দেখতে হবে পরীক্ষকদের। আর এটা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সুতরাং দু’টি পরীক্ষার সঠিক মূল্যায়ন কি করা সম্ভব হবে? উঠছে প্রশ্ন।
এদিকে এই ফরমান চিঠি দিয়ে জানিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আর তাতেই বেজায় চটেছে শিক্ষকরা। ওই চিঠিতে লেখা আছে, শিক্ষক–শিক্ষিকাদের মাধ্যমিকের খাতা নিতে হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি। আর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম পর্বের খাতা ৯ মার্চ এবং শেষ পর্বের খাতা ২২ মার্চ নিতে হবে। এই সূচি নিয়েই বেশ বিরক্ত শিক্ষক–শিক্ষিকারা। তবে এখনও কোনও পদক্ষেপ করবেন কিনা তাঁরা সেটা জানা যায়নি। প্রত্যেক স্কুলেই এই নিয়ে বেশ চর্চা তুঙ্গে উঠেছে স্টাফ রুমে। তবে এটা বেশ কষ্টসাধ্য কাজ বলে তাঁরা প্রত্যেকেই মনে করছেন।
অন্যদিকে এই একসঙ্গে মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখা নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। নদিয়া জেলার করিমপুরের স্কুল শিক্ষক সুহৃতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘মাধ্যমিকের খাতা দেখতে হবে প্রথম দফায় ৮ মার্চ, আর পরের দফায় সেটা ১৬ মার্চ জমা দিতে হবে। আবার উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে প্রথম পর্বের খাতা নিতে হবে ৯ মার্চ। সেই খাতা জমা দিতে হবে ১৫ মার্চ। তারপরে দ্বিতীয় দফায় খাতা নিতে হবে ২২ মার্চ। কিন্তু ৮ ও ১৫ মার্চের মধ্যে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক, দুই পরীক্ষার খাতাই একসঙ্গে দেখতে হবে।’ এখানেই জটিলতা তৈরি হচ্ছে। যা মেনে নিতে রাজি নন স্কুলের শিক্ষকরা।
আরও পড়ুন: কয়লা পাচারে পুলিশকর্তার নাম ইডির হাতে, লালার ডায়েরিতে লেনদেন ৮ কোটি টাকার
এছাড়া বেশ কয়েকজন শিক্ষক–শিক্ষিকা একসঙ্গে বলেছেন, ‘মূল্যায়ন সঠিক হবে কি না সেটা ভাবার বিষয়। একজন শিক্ষক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক, দুই পরীক্ষার খাতা পেলে সেটা দেখার ক্ষেত্রে চাপ তৈরি হয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সমন্বয়ের অভাব এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে।’ যদিও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমরা শুধু মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদেরই মাধ্যমিকের খাতা দেখতে দিই।’ আর উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘এটা অন্য কোনওবার হয় না। এবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা গায়ে গায়ে। দুটো পরীক্ষাই ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ করতে হবে। শিক্ষকের অভাবে মাধ্যমিক স্তরে যে শিক্ষকরা উচ্চমাধ্যমিক পড়ান শুধু তাঁদেরকেই উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা দেখতে দেওয়া হচ্ছে। এতে মূল্যায়নে প্রভাব পড়বে না।’