মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। গোটা ব্রিগেড যেন তাকিয়ে ছিল তাঁর দিকেই। কানায় কানায় পূর্ণ ব্রিগেড। গোটা ব্রিগেড জুড়ে শুধু কালো মাথার ভিড়। শূন্য আসনে থাকা বামেদের ব্রিগেডের এত ভিড় দেখে চোখ কপালে উঠেছে অনেকেরই। আর সেই ভরা ব্রিগেডে বক্তব্যের একেবারে শেষ অংশ কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা বলতে গিয়ে হোঁচট খেলেন মীনাক্ষী।বললেন, আমি বিদ্রোহী রণক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত। যেদিন অত্যাচারীর খড়্গকৃপান….এরপর বললেন, ভুলে গেছি। কোথাও কোনও ভনিতা নেই। ঠিক যেন পাশের বাড়ির কন্যা। পরের লাইনটা একটু সংশোধন করে বললেন মীনাক্ষী।
তবে এদিন বামনেত্রীর এই বিদ্রোহী কবিতা বলতে গিয়ে ভুলে যাওয়ার বিষয়টি নজর কেড়েছে গোটা ব্রিগেডের। এই ভুলে যাওয়াকে অবলীলায় মেনে নেওয়াকে গ্রহণ করল গোটা ব্রিগেড। যে কিশোরী একদিন বাবার হাত ধরে ব্রিগেডে আসতেন, যে কিশোরী একদিন দেখতেন গরিব মানুষের অধিকার রক্ষার স্বপ্ন, সেই মীনাক্ষী এদিন সাফ জানিয়ে দিলেন, বিশ্বাসঘাতক হতে পারব না। লড়াইয়ের ময়দানে থাকার কথা বার বার জানালেন তিনি।
জানালেন প্রাক্তনীদের কথা। জানালেন সামনের সারিতে বসে থাকা কমরেডদের কথা। জানালেন ব্রিগেডের একেবারে শেষ সারিতে বসে থাকা সেই প্রান্তিক মানুষটার কথা।
তবে এদিন ব্রিগেডের মন জয় করলেন মীনাক্ষী। আর মীনাক্ষীর পরেই বক্তব্য রাখতে ওঠেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। বক্তব্য রাখতে উঠেই তিনি বলেন, কাজি নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা বলতে গিয়ে, ভুলে গিয়েছিল মীনাক্ষী। অনেকে আমায় বলেন, দক্ষিণপন্থী আর বামপন্থীদের মধ্য়ে ফারাক কোথায়? দেখুন এটাই হল দক্ষিণপন্থী আর বামপন্থীদের মধ্য়ে ফারাক। মীনাক্ষী বলল, ভুলে গেছি। আসলে রণক্লান্ত। তবে শান্ত হবেন না।
সেলিম বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় কোনও দিন বলতে পারতেন ভুলে গেছি? মোদী কোনও দিন বলতেন ভুলে গেছি! ফ্য়াসিস্টরা কোনওদিন স্বীকার করেন না। কিন্তু বামপন্থীরা ভুল স্বীকার করেন। ভুজুং ভাজুং দেয় না, ডহরবাবুকে খোঁজে না। আমরা চোরকে চোর বলতে, দুর্নীতিগ্রস্তদের দুর্নীতিগ্রস্ত বলতে ভয় পায়নি। বামপন্থা ভয় পায়নি ভয় পায়না। একবার যদি ভয়কে জয় করা যায় যাকে আপনি ভয় করছেন দেখবেন সে আপনার থেকেও ভীরু।