কলকাতা পুরসভার ডোম পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে এবার ‘ফিল্ড টেস্ট’ নেওয়া শুরু করল মিউনিসিপাল সার্ভিস কমিশন। তাতে ধাপার মাঠে করোনায় মৃতদের জন্য নির্ধারিত শ্মশানে কোন প্রার্থী কত দ্রুত বিধি মেনে দেহ চুল্লিতে পৌঁছে দিতে পারছেন তার ওপর দেওয়া হচ্ছে নম্বর। সঙ্গে দেখা হচ্ছে, মৃতদেহের সঙ্গে মানবিক আচরণ করছেন কি না ওই প্রার্থী। দেহের প্রতি কোনও অশ্রদ্ধা ফুটে উঠছে কি না তাঁর চোখে মুখে।
কলকাতা পুরসভার ডোম-এর ২২টি শূন্যপদে নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে। তাতে সমস্ত আবেদনপত্র থেকে বাছাই করা হয়েছে প্রায় ৯০০ জন প্রার্থীকে। তাঁদেরই পালা করে ধাপার শ্মশানে চলছে পরীক্ষা। গত ১২ নভেম্বর থেকে দলে দলে পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন শ্মশানে। করোনারোগীর দেহ শবদেহবাহী গাড়ি থেকে কত দ্রুত নামিয়ে তাঁরা চুল্লিতে পৌঁছতে পারছেন তার ওপরে রয়েছে নম্বর। সঙ্গে দেখা হচ্ছে দেহের সঙ্গে প্রার্থী মানবিক আচরণ করছেন কি না। শবদেহের প্রতি কোনও অশ্রদ্ধা তাঁর চোখে মুখে ফুটে উঠছে না তো?
মিউনিসিপাল সার্ভিস কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় সরকারি চাকরি দেখে নিজের শারীরিক সক্ষমতা বিচার না করেই আবেদন করেন অনেকে। পরে সেই কাজ করতে গিয়ে বেগ পেতে হয় তাঁকে। সমস্যায় পড়তে হয় বিভাগকেও। তাই শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি নির্দিষ্ট কাজে তার যোগ্যতা যাচাই করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
এর আগে বর্জ্য অপসারণ ও রাস্তা পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল কমিশন। ৪০ কিলোগ্রাম বর্জ্য কে কত তাড়াতাড়ি পরিষ্ছন্ন ভাবে বেলচা দিয়ে গাড়িতে তুলতে পারে তার ওপর ভিত্তি করে হয়েছিল নিয়োগ। ৫০০ মিটার রাস্তা কে কত দ্রুত ঝাড়ু দিতে পারে তার ওপর ভিত্তি করে হয়েছিল ঝাড়ুদার পদে নিয়োগ।
কমিশনের আধিকারিক জানান, সরকারি চাকরির ভেবে আবেদন করলেও শ্মশানে এসে মৃতদেহ সরাতে হবে শুনেই অনেকে পালাচ্ছেন। এদের নিয়োগ করলে তো বিপদ হতো। পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, মিউনিসিপাল সার্ভিস কমিশন একটি স্বশাসিত সংস্থা। প্রার্থীর যোগ্যতা যাচাই করে নিয়োগ হলে নাগরিকরা ভাল পরিষেবা পাবেন। এ তো ভাল কথা।