গত বছর একুশে জুলাইয়ের পরেই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর এবছর ফের একুশে জুলাইয়ে শহীদ দিবসের সমাবেশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে এ বছরের শহীদ দিবসের মঞ্চ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামই শোনা যায়নি কোনও নেতা নেত্রীর মুখে। তা নিয়ে বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দিলেন ধৃত হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা। একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে তাঁর নাম না ওঠায় তিনি খুশিই হয়েছেন। সোমবার আদালতে থেকে বেরিয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন পার্থ।
আরও পড়ুন: ‘বিনা বিচারে একবছর জোর করে আটকে রেখেছে’, আদালতের পথে সুর চড়ালেন পার্থ
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবার আলিপুর আলোতে তোলা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। আদালতে প্রবেশ এবং আদালত থেকে বের হয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি এদিন একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। একুশে জুলাই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একের পর এক বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থকে জিজ্ঞেস করা হয় তিনি একুশে জুলাই অনুষ্ঠান দেখেছেন কিনা? তিনি উত্তরে জানান, ‘হ্যাঁ দেখেছি।’ এর পরেই এবারের শহীদ দিবসের সমাবেশে তাঁর নাম উচ্চারণ করা হয়নি শুনে জবাবে পার্থ বলেন, ‘আমি খুশি হয়েছি এত বড় মঞ্চ থেকে আমার নাম নিলে বিপদ হত।’ তবে যারা শহীদ হয়েছেন তাঁদের পরিবারকে একটা করে চাকরি দেওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন পার্থ। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁদের চাকরির জন্য আবেদন করছি।’
প্রসঙ্গত, গত বছর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। তারপরে গত বছরের ২৩ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার করেন ইডির আধিকারিকরা। তারপর থেকেই জেলে রয়েছেন তৃণমূলের এই হেভিওয়েট নেতা। আদালতে পেশ করার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য করেন, ‘বিনা বিচারেই আমাকে এক বছর ধরে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিনা বিচারে একবছর হয়ে গেল। আমাকে একবছর জোর করে আটকে রেখেছে।’ যদিও সিবিআই এবং ইডির তরফে বারবার দাবি করা হয়েছে এই দুর্নীতির পিছনে বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এমন প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন, ‘কে কী বলল তাতে আমার যায় আসে না। আমি শুধু এটুকুই জানি যে আমাকে জোর করে আটকে রেখেছে।’ উল্লেখ্য, গত বছর ২২ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। পরের দিন ২৩ জুলাই গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে। এদিনও তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ৭ অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করা হয়েছিল। এদিন পার্থর জামিনের আবেদন খারিজ করে ৭ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তবে পার্থ এদিনও বলেন, ‘আমি দলের সঙ্গে ছিলাম দলের সঙ্গে থাকব।’