নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয় বর্ষপূর্তি। অর্থাৎ জেলেই একবছর কেটে গেল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আজ, সোমবার আবার আদালতে পেশ করা হয়। আর সোমবার আদালতে যাওয়ার পথেই সুর চড়ালেন তিনি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় রীতিমতো প্রশ্ন তুললেন বন্দিমুক্তি কমিটি কোথায়? নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ২০২২ সালের ২২ জুলাই নাকতলায় পার্থের বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২৩ জুলাই মাঝরাতে গ্রেফতার করা হয় পার্থকে। তার পর তদন্ত নেমে নানা অভিযোগ করেছেন তদন্তকারীরা। এখন পার্থের ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেল।
এদিকে মন্ত্রিত্ব খুইয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আবার দলের পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক সম্মান নষ্ট হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সব হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন তিনি। কিন্তু এবার তাঁকে সুর চড়াতে দেখা গেল। তাও আবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধেই। আগেও বন্দিদশা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। এমনকী মুক্তির জন্য ‘বন্দি মুক্তি আন্দোলনকারী’দের উদ্দেশে বার্তাও দিয়েছিলেন পার্থ। ইডির পর সিবিআইয়ের হাতেও গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যদিও মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজনৈতিক বন্দি নন। কোনও ষড়যন্ত্রের শিকার হতে পারেন। তবে যেহেতু রাজনৈতিক বন্দি নন, তাই আইনি পদ্ধতিতে ওনাকে জামিন পেতে হবে।’
অন্যদিকে আজ, সোমবার পার্থকে আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে সুর চড়ান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ তাঁর বিচার হচ্ছে না বলে তিনি আজ দাবি করেন। একইসঙ্গে বিনা বিচারে তাঁকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে বলেও আজ অভিযোগ করেন তিনি। এদিন তাঁর চড়া মেজাজ এবং আত্মবিশ্বাস দেখে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ইডির প্রাক্তন আইনজীবী এবার তাঁর হয়ে মামলা লড়বেন বলে সূত্রের খবর। তাই এমন মন্তব্য বলে অনেকে মনে করছেন।
আরও পড়ুন: ‘মণিপুরের অবস্থা বাংলার চেয়ে ভাল হলে ইন্টারনেট চালু করুন’, ধরনা থেকে সওয়াল অভিষেকের
ঠিক কী বলেছেন পার্থ? এদিন আদালতে প্রবেশের সময় সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন। আপনার তো জেলে একবছর হয়ে গেল। এটা নিয়ে কী বলবেন? জবাবে সপর চড়িয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কোনওরকম বিচার ছাড়া আমাকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। এক বছর বিনা বিচারে আছি। আমায় জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। বন্দিমুক্তি আন্দোলনকারীদের জিজ্ঞাসা করুন। তাঁরা মুখ খুলছেন না কেন? বিনা বিচারে একবছর হয়ে গেল। আমাকে একবছর জোর করে আটকে রেখেছে। কে, কি বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না, আমাকে জোর করে আটকে রেখেছে।’ বিনা বিচার কেন বলছেন? উত্তর এল, ‘বিচার হচ্ছে না তাই’।