দীর্ঘ জেরা–পর্ব থেকে আদালত, সেখানে বমি এবং জ্ঞান হারানো। আর তারপর সোজা হাসপাতালে। এই লম্বা ঘটনাবলীর পর একটু চোখ লেগে গিয়েছিল রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। কিন্তু এক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের কাণ্ডকারখানায় তাঁর ঘুম ভেঙে যায় মাঝরাতে। এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রীকে। তাঁকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তার আগে চলেছে লম্বা জেরা–পর্ব। তারপর গ্রেফতার করে আনা হয় ইএসআই হাসপাতালে। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। তারপর ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। সেখানে শরীর খারাপ হয় মন্ত্রীর। তাই তাঁকে আনা হয় ইএম বাইপাসের ধারে বেসরকারি নার্সিংহোমে। আর সেখানেই এই ধকল সামলে ঘুমিয়ে পড়েন মন্ত্রী। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের কাণ্ডে ঘুমে ঘটল ব্যাঘাত।
ঘুমে মন্ত্রীর ব্যাঘাত ঘটেছে এই অভিযোগে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। জওয়ানের নাক ডাকার আওয়াজে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। চিকিৎসকদের কাছে এমনই অভিযোগ করলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে সোমবার বিকেলে মন্ত্রীকে ছুটি দেওয়া হবে কিনা সেটা নিয়ে বৈঠকে বসবে মেডিক্যাল বোর্ড। কিন্তু মন্ত্রীর খাটের পাশে বসে থাকা জওয়ান যে নাক ডেকেই চলেছেন। আর সে ডাকেই ঘুম ভেঙে গেল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। চিকিৎসকের কাছে এই নিয়ে অনুযোগ করেছেন মন্ত্রী।
এদিকে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতারের পরই আদালতে মাথা ঘুরে পড়েন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দ্রুত তাঁকে ভর্তি করা হয় বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেও পুরোপুরি ইডির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন মন্ত্রী। শনিবার এবং রবিবার তাঁর একাধিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু রাতে ঘুমের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের মেঘগর্জন নাক ডাকা ব্যাঘাত ঘটাল রাজ্যের মন্ত্রীর। হাসপাতালের কেবিনে মন্ত্রীকে ২৪ ঘণ্টা নজর রাখছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। সেখানেই মন্ত্রীর বেডের পাশে রাতেও চেয়ারে বসে জওয়ান পাহারায়। সারাদিনের দৌড়াদৌড়ি ও তার জেরে ক্লান্তিতে তিনি ঘুমিয়েও পড়েন। তখনই শুরু হয়ে যায় নাক ডাকা। নাক ডাকার আওয়াজে ঘুমোতে পারেননি মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: গীতা জয়ন্তী হতে চলেছে ব্রিগেডে, রাষ্ট্রপতি–মুখ্যমন্ত্রী কি আবার একমঞ্চে আসছেন?
আর কী জানা যাচ্ছে? অন্যদিকে সকাল হতেই পর্যবেক্ষণে আসা চিকিৎসকের কাছে নাকা ডাকার অনুযোগ করলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। চিকিৎসক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘রাতে ঘুমিয়েছেন?’ অনুযোগ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ঘুম আর হল কেমন করে! জওয়ানের নাক ডাকার আওয়াজে একদম ঘুমোতে পারিনি।’ গত তিনদিনে দু’দফায় এমআরআই হয়েছে মন্ত্রী। আর সিটি স্ক্যান, রক্তের নানাবিধ পরীক্ষা, ইসিজি, ইকো, হল্টার মনিটরিং করা হয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। তবে বাঁ–হাত সামান্য দুর্বল রয়েছে। বাকি চিকিৎসার সব রিপোর্টই স্বাভাবিক। রবিবার রাতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে সিসিইউ থেকে ৩৭৪ নম্বর কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। ছুটি কবে? তা নিয়ে আজ বিকেলে বৈঠক করবে মেডিক্যাল বোর্ড। মন্ত্রীর শারীরিক রিপোর্ট রবিবার সন্ধ্যায় ইডি’র হাতে তুলে দিয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল। সেই রিপোর্ট ইডি জমা দেবে আদালতে।