হালে পানি না পেয়ে হুমায়ুন কবীর যোগাযোগ করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সঙ্গে। কারণ হুমায়ুনের হাতে পৌঁছেছিল শোকজ নোটিশ। তাঁর যা বলার লিখিত আকারেই দলকে জানাতে বলা হয়েছিল। তিনিও উত্তর লিখে পাঠিয়ে ছিলেন। তারপরই এবার তৃণমূল ভবনে ডাকা হল ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে। মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে আগামীকাল শনিবার তলব করা হয়েছে। সেখানে তিনি হাজির থেকে নিজের মনের কথা বলবেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছিলেন এই বিধায়ক।
এদিকে মুর্শিদাবাদের নেতৃত্বকে নিয়ে শনিবার বৈঠক করবে রাজ্য নেতৃত্ব। সেখানে হুমায়ুন কবীরকে আসতে বলা হয়েছে। ওই বৈঠকে সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম–সহ কয়েকজন প্রথমসারির নেতারা থাকবেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এই বিধায়ক দলের হয়ে খাটেননি বলে অভিযোগ। এমনকী নিজের অনুগামীদের নির্দল হিসাবে দাঁড় করিয়ে দলকে চাপে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি হুমায়ুন কবীরের। তখন তৃণমূল কংগ্রেস সন্ত্রাস করে জিতেছে বলে অভিযোগ তোলেন। এমনকী নতুন দল গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক।
তাহলে এখন কেন উল্টো–সুর? ভরতপুরের এই বিধায়ক বুঝেছেন প্রত্যেক জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত। তাই বিজেপিতে গিয়ে লাভ হবে না। আবার অধীর চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে বহুদিন আগেই পৌঁছেছে। তাই কংগ্রেসে গিয়ে খুব কিছু করা যাবে না। সিপিএম তাঁকে দলে নেবে না। এই পরিস্থিতিতে যেখানে ছিলেন সেখানেই থাকা ভাল বুঝে উল্টো সুর ধরেছেন। যদিও এসব কথা স্বীকার করেননি স্বয়ং হুমায়ুন কবীর। তিনি শুধু সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘আমি তৃণমূলে আছি, তৃণমূলেই থাকব।’
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অবস্থানে বসলেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক, কোন দাবিতে অনড়?
এখন কী করবেন ভরতপুরের বিধায়ক? সূত্রের খবর, তিনি যে চিঠি লিখেছেন তাতে বারবার ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ রয়েছে। ভুল স্বীকারের কথা উল্লেখ রয়েছে। এমনকী আর একটা সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই বিষয়ে শুক্রবার ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আমার কোনওদিন সমস্যা ছিল না। শোকজের জবাবও দিয়েছি। আর নতুন দল করার কোনও প্রশ্নই নেই। অধীর চৌধুরীর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। কেউ কেউ মিথ্যা রটাচ্ছে। অথচ জেলার বেশ কিছু তৃণমূল নেতা অধীরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। একটা সমস্যা হয়েছিল ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের টিকিট বণ্টন নিয়ে। তাতেই জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আমার সংঘাত হয়। আমি শোকজের জবাবও দিয়েছি।’