গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং এখন নয়াদিল্লি গিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি পাহাড়ে এবং উত্তরবঙ্গের জেলায় তেমন কোনও সাফল্য পায়নি। এই আবহে দলের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি বিধায়কের। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিধানসভায় বাবাসাহেব আম্বেদকর মূর্তির সামনে একাই অবস্থানে বসলেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি বলেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন বিধায়ক। কেন্দ্রে এখন তাঁদেরই সরকার। সেখানে এমন সেমসাইড গোল খেয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে বঙ্গ–বিজেপির নেতারা।
এদিকে বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সেখানে পাহাড়ের মানুষের কাছে এটা একটা বড় ইস্যু। আগে বিজেপি নেতা–মন্ত্রীরা পৃথক উত্তরবঙ্গের কথা বলতেন। কিন্তু তাতে লাভ না হওয়ায় এখন মুখে সে কথা বলছেন না। উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার কথা বারবার বলে এসেছেন বিজেপি নেতা–মন্ত্রী–সাংসদরা। এখন পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বিধানসভায় আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে অবস্থানে বসেছেন। এই বিষ্ণুপদ শর্মা দু’দিন আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাদা করে বিধানসভায় দেখা করেছিলেন বলে সূত্রের খবর। তারপর এমন অবস্থান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
ঠিক কী বলেছেন বিজেপি বিধায়ক? অন্যদিকে পাহাড়ে ১৫ বছর ধরে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা পালন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদ শর্মা সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আসন্ন লোকসভার আগে সংসদের মাত্র একটা সেশন বাকি আছে। আজ পর্যন্ত পাহাড়ের মানুষের সমস্যা নিয়ে সংসদের ভিতরে তোলা হয়নি। অথচ এই পাহাড়ই ১৫ বছর সাংসদ দিয়েছে। কবে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হবে? এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে’। অর্থাৎ তিনি পাহাড়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার নাম না করে খোঁচা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ল লালগড়ের ফেয়ার–ওয়েদার সেতু, বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল ২০টি গ্রাম
আর কী বলেছেন বিষ্ণুপদ? পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি না রাখাকেই দায়ী করেন বিষ্ণুপদ শর্মা। তবে এবার তিনি পাহাড়ের মানুষের জন্য লড়াই করবেন বলে জানিয়ে দিলেন। তাঁর হুঙ্কার, ‘এতদিন আমি রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করেছিলাম। এবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখলাম। এখন দেখার এই দাবি পূরণ হয় কিনা।’ যদিও পাহাড় ভাগ হোক, শৈলশহরে আগুন জ্বলুক সেটা চান না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা রাজ্য একটা সুতোয় বাঁধা থাকুক সেটাই চান মুখ্যমন্ত্রী। এটা তিনি বারবার বিভিন্ন সভা–সমাবেশ থেকে বলেছেন। সেখানে আবার নতুন জিগির কীসের ইঙ্গিত? উঠছে প্রশ্ন।