এবার বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে গ্রাম সভার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখান থেকেই নতুন আন্দোলনের বিষয় ঠিক করার কথা ছিল। আর তার জন্য নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সেটি হওয়ার কথা ছিল। তারিখ ঠিক হয়েছিল— আগামী ১৬ নভেম্বর। কিন্তু সেই তারিখটি এবার পরিবর্তন করা হল। সেটা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে টুইট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই দিন ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচ রয়েছে ইডেন গার্ডেন্সে। তার জন্যই সভার দিন বদল করা হল। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৬ নভেম্বরের পরিবর্তে ওই সভা হবে ২৩ নভেম্বর।
এদিকে গতকাল বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি ঘোষণা করেন, ১৬ নভেম্বর নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূল কংগ্রেসের সভা হবে। আর সেই সভা থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরবর্তী স্ট্র্যাটেজি ঠিক করা হবে। কিন্তু ওই দিনই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের গায়েই ইডেন গার্ডেন্সে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ম্যাচ হবে। ওইদিন দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচ। ফলে খেলা এবং সভা সামলাতে বেশ চাপ বাড়বে পুলিশের উপর। কারণ দু’টি ক্ষেত্রেই ভিড় হবে। যা সামলানো কঠিন। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সভা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অন্যদিকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের ম্যাচ দেখতে অন্য রাজ্য থেকেও মানুষজন আসবে। তার উপর কলকাতা এবং জেলার মানুষজনও ভিড় করবেন খেলা দেখতে। এমন আবহে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চললে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। এই দুটি ঘটনা যদি একসঙ্গে ঘটত তাহলে লালবাজারের পুলিশের একটা বড় অংশকে চাপে পড়তে হতো। তাছাড়া তখন তৃণমূল কংগ্রেসের সভা হলে সাংসদ, বিধায়ক, পুরসভার কাউন্সিলর, জেলা পরিষদের সদস্য, ব্লক সভাপতিদের গাড়ির চাপ বাড়ত। সবমিলিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতো। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতির কথা অনুভব করেই সভার দিন বদল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের সঙ্গে ৪০ মিনিট কী কথা হল মুখ্যমন্ত্রীর? গাড়ি থামিয়ে জানালেন মমতা
আর কী জানা যাচ্ছে? একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ৩১ অক্টোবর তারিখের মধ্যে সদুত্তর না পেলে আবার আন্দোলনের কথা বলা হয়েছিল। সেই আন্দোলন ১ নভেম্বর থেকে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে একটা চিঠি কেন্দ্র পাঠায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। সেই চিঠি রাজ্যপাল পাঠিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এই পরিস্থিতিতে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা–সহ বিভিন্ন প্রকল্পের বকেয়া অর্থ নিয়ে আন্দোলন শুরু হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘১ নভেম্বর থেকে আমাদের আন্দোলনে নামার কথা ছিল। কিন্তু ১৬ তারিখ রূপরেখা ঠিক করে আমরা রাস্তায় নামব। ওই টাকা বাংলার মানুষের প্রাপ্য। কাজ করার পরেও মজুরি আটকে রেখেছে। যত দিন না সেই টাকা রাজ্য পাচ্ছে, তত দিন আন্দোলন চলবে।’