আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্য বাজেট। রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াই হতে চলেছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। তবে এটা বেআইনি নয় বলে জানালেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে সংসদেও এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিধানসভায় রাজ্যপাল এবং সংসদে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিয়ে সাধারণত বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। এটাই চিরাচরিত নিয়ম। কিন্তু বিধানসভার চলতি বাজেট অধিবেশন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভাষণ ছাড়াই শুরু হয়েছে। এবার সিভি আনন্দ বোসের ভাষণ ছাড়াই বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ায় বিতর্ক করছে বিজেপি। রাজ্য বাজেট ঘিরে বিধানসভার ‘পাওয়ার করিডরে’ এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
কেন এই অপেক্ষার প্রহর গোনা হচ্ছে? বিধানসভায় আজ বাজেট পেশ করবেন রাজ্য মন্ত্রিসভার স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সেখানে সামাজিক প্রকল্পে লক্ষ্মীলাভ থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগের প্রস্তাবের দিকে চোখ রেখেছে শিল্পমহল। তাই প্রহর গোনা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া বাজেট অধিবেশন সংবিধান বহির্ভূত কোনও বিষয় নয়। এটা বেআইনিও নয়। এমনকী রীতি বহির্ভূতও নয়। ১৯৬২ সালে সংসদে এই ঘটনা ঘটেছিল। এই বাজেট অধিবেশন শীতকালীন অধিবেশনের ধারাবাহিকতা। এটা বছরের প্রথম অধিবেশন নয়।’
এদিকে গতকাল হাওড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে রাজ্যের মানুষের উদ্দেশে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার একটা আভাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায। তাঁর কথায়, ‘আগামী দিনে কী করব শুনলে চমকে যাবেন।’ তাঁর এই কথাতেই পরিষ্কার, লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের শেষ বাজেটে বড় চমক দিতে চলেছেন তিনি। সেটা যে রাজ্য বাজেটে প্রতিফলিত হবে ধরে নিয়েছেন অনেকেই। সেই বাজেট রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া বলে বিজেপি নানা কথা বলতে সুরু করেছে। বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ির যুক্তি, ‘১৯৬২ সালে চিন ভারতকে আক্রমণ করেছিল। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তখন সংসদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি রাখা হয়েছিল। দেশে এখন তেমন কোনও পরিস্থিতি নেই। তা হলে কেন রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া বাজেট অধিবেশন হবে?’ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘২০০৪ সালেও সংসদে এমনভাবেই বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছিল। তখন কিন্তু দেশে কোনও বিশেষ পরিস্থিতি ছিল না’।
আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাত রক্তাক্ত’, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে খতম করার অভিযোগ ডেরেকের
অন্যদিকে এই বাদানুবাদের মধ্যে দিয়েই বোঝা যাচ্ছে বাজেট অধিবেশনও তপ্ত হয়ে উঠবে। তবে এই বিষয়টি নিয়ে রাজভবন কোনও আপত্তি তোলেনি এখনও। এমন আবহে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্যের কোষাগার থেকেই ১০০ দিনের কাজের ২১ লক্ষ জবকার্ড হোল্ডারের বকেয়া টাকা মেটাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আবাস প্রকল্পের ১১ লক্ষ উপভোক্তার টাকা রাজ্য সরকার দেবে বলে আগেই জানিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সুতরাং গতবারের ২৬ হাজার ৬০৩ কোটি টাকার জায়গায় এবার পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ এলাকা উন্নয়ন খাতের বাজেট অনেকটাই বাড়ানো হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টে নাগাদ বিধানসভায় বাজেট প্রস্তাব পেশ করবেন রাজ্যের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।