রাজ্য–রাজনীতিতে এখন শাসক–বিরোধী বলতে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি। তাই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হলেও মূল কথা হবে যুযুধান দু’পক্ষের মধ্যে বলে অনেকে মনে করছেন। তবে সেখানে সিপিএম এবং কংগ্রেসকেও ডাকা হয়েছে। বিধানসভায় পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রস্তাব আসছে। আর তা নিয়েই আগামী ২৯ অগস্ট নবান্ন সভাঘরে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করেছিলেন। যা নিয়ে আপত্তি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী রাজ্যপালকে চিঠি লিখে তিনি সতর্কও করেছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। এবার বিধানসভায় প্রস্তাব নিয়ে আসার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন তিনি।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন নিয়ে উদ্ভূত সংঘাতের মধ্যে এমন সর্বদল বৈঠকে প্রধান বিরোধী দল আসবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত নিয়েই প্রস্তাব আনা হচ্ছে বিধানসভায়। সেখানে মূল বিষয় পশ্চিমবঙ্গ দিবস। ইতিমধ্যেই তিনটি তারিখ উল্লেখ করা হয়েছিল। তার মধ্যে পয়লা বৈশাখকেই মোটামুটি ঠিক করা হয়েছে। গত ২০ জুন তারিখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন করা হয়। যা নিয়ে আপত্তি ছিল রাজ্যের। তাই রাজ্যপালকে চিঠি লিখে, ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেছিলেন, যাতে রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন না করা হয়। কিন্তু তারপরও দেখা যায়, সাড়ম্বরে রাজভবনে পালিত হয় পশ্চিমবঙ্গ দিবস। এবার তা নিয়েই সর্বদলীয় বৈঠক।
অন্যদিকে বিধানসভায় কবে পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে প্রস্তাব নিয়ে আসা হবে? সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে তার আগেই নবান্নে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এখানে যদি বিজেপি না আসে তাহলে মানুষের কাছে বার্তা যাবে, বাংলা নিয়ে তাঁরা বিভাজন চায়। আর যদি যায় তাহলে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে গিয়ে সেখানে যোগ দেওয়া হবে। সুতরাং যে দিকেই বিজেপি যাক না কেন, তাতে জোর চর্চা হবেই। বরং নবান্নে গিয়ে তাঁরা যদি রাজ্যপালের দেওয়া তারিখ নিয়েই সোচ্চার হন তাহলে একমাত্র মুখরক্ষা হতে পারে।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর ঠোঁট কামড়ে ছিঁড়ে নিল স্বামী, রক্তারক্তি কাণ্ডে আলোড়ন দেখা দিল বাসন্তীতে
এছাড়া বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন। সেখানে যে সাত সদস্য রয়েছেন তাঁরা পয়লা বৈশাখকেই সিলমোহর দিয়েছেন। আবার বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল—কবিগুরুর গানটিকে রাজ্য সঙ্গীত হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তারপর সেখানে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা দেখার বিষয়। ২০ জুন তারিখের সঙ্গে বঙ্গভঙ্গের ইতিহাস জুড়ে আছে বলে তা মানতে নারাজ রাজ্য সরকার। এই কমিটির উপদেষ্টা হয়েছেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সুগত বসু। আবার সিপিএম ও কংগ্রেস এই বৈঠকে যোগ দিয়ে ইন্ডিয়া জোট হয়ে সওয়াল করতে পারে। তাই নবান্নের সর্বদলীয় বৈঠকে বিজেপি যাবে কিনা সেটা ভাবছে বলে সূত্রের খবর।