করোনা পরিস্থিতিতে এই প্রথম কোনও মিছিল বা জনসভায় নেতৃত্ব দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার কলকাতায় মেয়ো রোডের প্রকাশ্য মঞ্চেই তিনি স্বীকার করেন যে করোনা এখন গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সারা দেশ, বাংলা জুড়ে কোভিড মহামারী চলছে। ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তৃণমূলের ৩ বিধায়ক–সহ অনেক নেতানেত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আমার পরিচিত পুলিশকর্মী, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক— অনেকেই এই মারণ ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের কথা খুব মনে পড়ে।’
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকেই জানা গেল যে তাঁর খুব কাছের লোকজনই অতি সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ৬–৭ মাস ধরে প্রতিদিন অফিস করি। প্রায় প্রতিদিন কোনও না কোনও বৈঠক করি। এই অবস্থায় আমাদের নিজেদেরই সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এমনকী আমার বাড়িতে যে ছেলেটি আমাকে একটু চা দেয় সেও কালকে আক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। আমি বাড়ি ফিরে দেখি, বাড়িতে চা দেওয়ার একটা লোক নেই।’
বাড়ি ছাড়িয়ে নবান্ন পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে মারণ ভাইরাস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, ‘আমার অফিসে যে ছেলেটি কাজ করে, ফোন ধরে তাঁরও আজ কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ এরা বাইরে বের হয় না। কিন্তু তা সত্ত্বেও এত সাবধানতা অবলম্বন করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেও সবটা আটকানো যাচ্ছে না। পুলিশ কমিশনার আক্রান্ত হয়েছেন, এসপি–রাও হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন বহু পুলিশকর্মী।’
বিজেপি–র বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণের ভয়ে গত ৭–৮ মাস ধরে আমরা কোনও মিটিং–মিছিল করছি না। আজকে আমরা বাধ্য হয়েছি এই প্রতিবাদ মিছিল করতে। কিন্তু বিজেপি একতরফা মিছিল, সভা করে যাচ্ছে। দাঙ্গা লাগাচ্ছে, গণ্ডগোল করছে। একইসঙ্গে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দিচ্ছে বিজেপি।’
এদিন মিছিল ও সভা শেষে সেখানে উপস্থিত তৃণমূল নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষের উদ্দেশে ফের করোনা সচেতনতা বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বাড়িতে পৌঁছে তাঁদের ভাল করে কাপড় কেচে, গা–হাত পা ধুয়ে নিয়ে, স্যানিটাইজ করিয়ে তার পর ঘরে ঢোকার পরামর্শ দিয়েছেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।