আজ, মঙ্গলবার রথযাত্রা উপলক্ষ্যে কলকাতার ইসকন মন্দিরে উৎসবের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে সেখানে হাজির ছিলেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, সাংসদ মিমি চক্রবর্তী ও সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া আরও অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা নাগাদ এই রথযাত্রার উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথা মেনে মুখ্যমন্ত্রী রথে চড়ে জগন্নাথের মঙ্গল আরতি করেন। তাঁকে ফুল অর্পণ করেন। তারপর রথ থেকেই শান্তির বার্তা দেন তিনি রাজ্যবাসীকে। এমনকী আজ প্রথা মেনে রথের পুজো শেষ করে তিনি সকলের সঙ্গে রথের দড়িতে টান দেন।
এদিকে রাজভবনে আজ পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করা হয়। তাছাড়া আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় বহু মানুষ মারা গিয়েছে। এই সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শান্তির বার্তা দেন। আর এই বিষয়ে ইস্কনের প্রধান অনন্ত মোহন দাস মহারাজ বলেন, ‘আমরা এমন এক জগতে বাস করছি, যেখানে সর্বদা উদ্বেগ এবং বিভ্রান্তি আমাদেরকে উত্তেজিত করে তুলছে। তাই আমরা মনের শান্তি চাই। তাই এই বছর কলকাতার রথযাত্রার থিম ‘মানসিক শান্তি’। ইসকনের লক্ষ্য আধ্যাত্মিক জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষের অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করে তাঁদের শান্তির দিকে পরিচালিত করা।’
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিষ্ঠার সঙ্গে রথের পুজো করতে দেখা গেল। বিশ্বের, দেশের এবং রাজ্যের মানুষের শান্তি কামনা করলেন তিনি। তিনি যখন রথযাত্রা নিয়ে ব্যস্ত তখন খবর আসে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে বলেছেন। অর্থাৎ কলকাতা হাইকোর্টের রায়কেই মান্যতা দেওয়া হয়েছে এবং রাজ্যের স্পেশাল লিভ পিটিশন খারিজ করা হয়েছে। তবে এই বিষয়টি নিয়ে রথের উৎসব থেকে কোনও মন্তব্য করেননি মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাঁর গলায় শোনা গেল শান্তির বার্তা।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন শান্তির বার্তা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। তাঁর কথায়, ‘দেবতা তো মানুষের মধ্যে থেকেই তৈরি হয়। মানুষের অন্তর আত্মাই দেবতার অন্তর আত্মা। দেবদেবীর মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের মনোবাসনা, আমাদের মনের স্বপ্ন, আমাদের মনের ব্যথা, আমাদের মনের কথা, আমাদের মনের সুখ–দুঃখ সব কিছু দেবতার চরণে অর্পণ করি। তার কারণ, এটা আমাদের বিশ্বাস। বিশ্বাসে মিলায়ে বস্তু, তর্কে বহুদূর।’ এরপরই তাঁর নতুন ঘোষণা, ‘পুরীর দৈতাপতি ফোন করেছিলেন। বললেন, রথে উঠছি। আমাদের নামে পুজো দেবেন। আমি বললাম, জগন্নাথ যদি পারমিশান দেন তাহলে আগামী বছর দিঘায় আমরা যে জগন্নাথ মন্দির গড়ছি সেখানেই বড় করে রথযাত্রার আয়োজন করব। মাহেশের উন্নয়ন আমরা করে দিয়েছি। ইস্কনকেও মায়াপুরে আমরা ৭০০ একর জমি দিয়েছি। আমি সবাইকে আমার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কিছুদিন আগেই এক রেল দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। অনেক মানুষ মারা গিয়েছেন। রথযাত্রা তো মুক্তির দিন। আমি তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি। আর বিশ্বের শান্তি, দেশের শান্তি, রাজ্যের শান্তি, মানুষের শান্তি কামনা করি।’