৭৬ পার করে পায়ে পায়ে ৭৭-এ। বসন্তের বাড়ন্ত বেলায় আরেকটু বৃদ্ধ হলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বার্ধক্যজনিত দীর্ঘ অসুস্থতা তো আছেই। সঙ্গে রয়েছে চোখের সমস্যা। সক্রিয় রাজনীতিকে বিদায় বলে গত কয়েক বছর ধরেই চার দেওয়ালে বন্দি তিনি। তবু বামেদের আন্দোলনে এখনো প্রত্যয় জোগায় তাঁরই নেওয়া পদক্ষেপ। কাজের জন্য ভিনরাজ্যে প্রবাসী বাঙালিদের দীর্ঘশ্বাসের নাম বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
১৯৪৪ সালের ১ মার্চ এমনই এক বসন্তের দিনে কলকাতায় জন্মেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আদ্যন্ত বামপন্থী পরিবারের এই ছেলে শৈলেন্দ্র সরকারের বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে বাংলা ভাষা পড়তে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। সেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি তাঁর। আন্দোলনের হাত ধরে ধীরে ধীরে কমিউনিস্ট পার্টিতে উত্থান প্রমোদ দাশগুপ্তের এই ছাত্রের। এক কালে ‘ছোটলোকের দল’ বলে পরিচিত সিপিআইএম-এ যে কয়েকজন সম্ভ্রান্তদেরও পছন্দের ছিলেন তাঁদের একজন অবশ্যই বুদ্ধবাবু। সাদা পাঞ্জাবি ও ধুতিতে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল সব মহলে।
দীর্ঘদিন ধরে শরীরটা ভালো নেই বুদ্ধবাবুর। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই বিমানে দিল্লি যাওয়া বন্ধ করেছিলেন। রাজ্যপাট যাওয়ার পর নিজেকে ফের পড়াশুনোর বৃত্তে ফিরে যান তিনি। ৮ বছরে লিখেছেন একের পর এক বই। হটকেকের মতো বিক্রি হয়েছে তাঁর বইগুলি।
এখনো মধ্য কলকাতার পাম অ্যাভিনিউয়ের সেই ২ কামরার ফ্ল্যাটই ঠিকানা বুদ্ধবাবুর। খাটের পাশেই পড়াশুনোর যাবতীয় ব্যবস্থা। গত বছর হঠাৎই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দলীয় সূত্রে খবর, এখন কিছুটা ভাল আছেন বুদ্ধবাবু।
বরাবরই জন্মদিন পালনে অনীহা বুদ্ধবাবুর। অন্যান্য বামপন্থী নেতাদের মতো তাঁর জন্মদিনটিও কাটে অনাড়ম্বরে। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কিছু শুভেচ্ছা বিনিময়েই মিটত যাবতীয় উজ্জাপন।
গত বছর রাজ্যের রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২৮ অগাস্ট বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়ি যান জগদীপ ধনখড়। তখন বিছানায় বসে থাকা বুদ্ধবাবুর ছবি নাড়া দিয়েছিল বহু মানুষকে। বুদ্ধবাবুর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছিলেন বহু মানুষ।