ক্যান্সার, ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগের দামি ওষুধ আর মিলবে না সরকারি হাসপাতালে। তার বদলে অপেক্ষাকৃত কমদামি ওষুধ দেবে রাজ্য সরকার। এই সিদ্ধান্তের কথা জানাজানি হতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চিকিৎসকদের একাধিক সংগঠন। তাদের প্রশ্ন, মানুষের স্বাস্থ্যের থেকে কি সরকারের কাছে বেশি দরকারি মেলা - খেলা আর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার? পালটা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের দাবি, অপচয় রুখতে এই সিদ্ধান্ত।
সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ক্যান্সারের ওষুধ সিসপ্লাটিন, এটোপোসাইড, সাইক্লোফসফামাইড, এনোক্সাপারিন, হাইড্রক্সিউরিয়া আর সরকারি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে পাওয়া যাবে না। পাওয়া যাবে না ডায়াবেটিসের ওষুধ লিনাগ্লিপটিন ও ভিলডাগ্লিপটিনের বদলে টেনেলিগ্লিপটিন। যার জেরে রোগীদের বিপাকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া রোগীদের এই ওষুধ কিনে খাওয়া প্রায় অসম্ভব।
সরকারের দাবি, এর বদলে অপেক্ষাকৃত কমদামের ওষুধ দেওয়া হবে রোগীদের। যার কার্যকারিতা একই। কিন্তু সরকারের এই তত্ত্ব মানতে নারাজ চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ। চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস গুমটা জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের ৩৫ হাজার ক্লাব বছর বছর অনুদান পাবে। দুর্গাপুজোয় অনুদান দেবে সরকার। আর ক্যান্সারের রোগী হাসপাতাল থেকে ওষুধ পাবে না। এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক কী হতে পারে? হাসপাতালে শুধু শুধু বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয় হোর্ডিং টাঙিয়ে রাখা কেন?’
তৃণমূল নেতা চিকিৎসক শান্তনু সেনের যদিও দাবি, এই সিদ্ধান্তের ফলে রোগীদের ওপর কোনও প্রভাব পড়বে না। কিছু চিকিৎসকের দামি ওষুধ লেখার অভ্যাস রয়েছে। কয়েকজন আবার বেসরকারি চেম্বারে রোগী দেখে সরকারি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। সেসব বন্ধ করতেই এই সিদ্ধান্ত।
কেন্দ্রের ন্যাশনাল হেলথ মিশনে প্রতি বছর ৭০০ কোটি টাকা পায় রাজ্য সরকার। এই টাকায় ওষুধ কেনা ও রোগীর নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা হওয়ার কথা। হিসাব বলছে, এর মধ্যে ৬০ কোটি টাকা খরচ হয় দামি ওষুধ কিনতে। তার বদলে কম দামি ওষুধ দিলে বছরে ১২ কোটি টাকা বাঁচবে সরকারের।