ওএমআর শিটের তথ্য না পেলে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেবেন। এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছেন, ডিজিটাল তথ্য মুছে ফেলা হলেও সেটা ফেরত পাওয়া যায়। পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার পরও ডিজিটাল তথ্য পাওয়া যাবে। তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে যাবতীয় তথ্য খুঁজে বের করতে হবে। সিবিআই যদি সেই তথ্য খুঁজে বের করতে না পারে, তাহলে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি মান্থা। অর্থাৎ বাতিল হয়ে যাবে প্রায় ৫৯,৫০০ চাকরি।
কোন বিষয়ের প্রেক্ষিতে সেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা?
২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের মাধ্যমে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া (২০১৬ সাল এবং ২০২০ সাল) চলেছিল, তা নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। মামলা করা হয়েছিল হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টে যে মামলার শুনানি হয়েছে, সেটাও বেআইনিভাবে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগে দায়ের করেন কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। সেই মামলার শুনানিতেই চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীরা জানান যে তাঁরা ওএমআরের আসল তথ্য হাতে পারেননি।
তারপরই উষ্মাপ্রকাশ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মান্থা। তিনি কড়া ভাষায় নির্দেশ দেন যে সিবিআইকে ওএমআর শিটের প্রকৃত তথ্য খুঁজে বের করতে হবে। ডিজিটাল ডেটা যদি কেউ বা কারা মুছে ফেলেন, তাহলেও সেই ডেটা ফিরিয়ে আনার সুযোগ আছে। আর ওএমআর শিটের ওএমআর শিটের প্রকৃত তথ্য খুঁজে বের করার জন্য সিবিআইকে প্রয়োজনে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে যাওয়ারও ছাড়পত্র দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা, যাতে ‘ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট’ খুঁজে আনতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আর বিচারপতি মান্থা যে ডিজিটাল তথ্যের কথা বলেছেন, সেটার ভিত্তিতেই ২০১৯ সালে এক চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিটের প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছিল। আর পর্ষদও জানিয়েছিল যে ওএমআর শিটের হার্ড কপি নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তবে ডিজিটাল ভার্সনে পুরোটা সংরক্ষিত আছে। সেই বিষযটির উল্লেখ করে হাইকোর্টের বিচারপতি মান্থা জানিয়েছেন যে ওএমআর শিটের ডিজিটাল তথ্য খুঁজে বের করতে সিবিআইকে। কোথায় এবং কীভাবে দুর্নীতি হয়েছে, সেটাও সিবিআইকে জানাতে হবে বলে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে সেই মামলার ফের শুনানি হবে।