বর্ষা শুরু হতেই বিপজ্জনক বাড়িগুলি নিয়ে চিন্তা বেড়েছে কলকাতা পুরসভার। অতীতে বর্ষাকালে বিপজ্জনক বাড়ির অংশ ধসে পড়ে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফের পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে মৃত্যু হল এক মহিলার। ঘটনাটি ঘটেছে জোড়াবাগান থানা এলাকায় কলকাতার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে। বুধবার রাতে ওই পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। তাতে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এছাড়ও দুজন আহত হয়েছে। জানা গিয়েছে মহিলার নাম ইলরা আগরওয়াল। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: পুরনো পাম্প হাউস ভেঙে মৃত্যু ব্যক্তির, পুনরাবৃত্তি রুখতে কড়া নির্দেশ মেয়রের
পুলিশ এবং পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ তলার ওই বহুতলের নিচের তলায় থাকতেন ইলরা আগারওয়াল, তাঁর স্বামী এবং নাবালক পুত্র। রাতে ৩ তলার বারান্দার একাংশ ভেঙে পড়ে তাঁদের উপরে। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় জোড়াবাগান থানার পুলিশ, দমকল, বিপর্যয় মোকাবেলা দফতর এবং কলকাতা পুরসভার কর্মীরা। এই ঘটনাই আহত হয়েছেন ইলরার স্বামী অজয় আগরওয়াল এবং তাঁর নাবালকপত্র। বর্তমানে তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। তবে অজয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই বাড়িতে আরও বহু ভাড়াটে রয়েছেন। এই দুর্ঘটনার পরে সমস্ত ভরাটেদের নিরাপদে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুরসভার তরফে ওই বাড়িকে আগেই বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপরেই বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, তারপরেও পুরসভার নির্দেশ অমান্য করে ওই বাড়িতে থাকছিল পরিবারগুলি। জানা গিয়েছে, ওই বাড়ির আরও বেশ কিছু অংশ বিপজ্জনক। সেগুলি আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে ভেঙে ফেলা হবে।
উল্লেখ্য, গত মাসে কলকাতায় একটি পরিত্যক্ত পুরনো পাম্প হাউস ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। মৃতের নাম পাপ্পু দাস (৩৬)। ঘটনাটি ঘটেছিল রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকার ৩ নম্বর লেক কলোনিতে। ওই ব্যক্তি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। বহু পুরনো ওই পাম্প হাউসটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। সেখানেই তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে চিন্তিত কলকাতা পুরসভা। বর্ষাকালে বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। পুরসভার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতায় প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। যার মধ্যে ৫০০টির অবস্থা খারাপ। ইতিমধ্যেই বর্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে বিপজ্জনক বাড়িগুলি নিয়ে চিন্তিত কলকাতা পুরসভা। অনেক ক্ষেত্রেই বাড়িগুলি খালি করার নোটিশ দেওয়া হলেও বেঁকে বসছেন মালিক, ভাড়াটেরা। তারা আদালতে গিয়ে পুনরায় বিপজ্জনক বাড়িতেই থাকছেন। এই অবস্থায় শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলি পরিদর্শনে যাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়াররা।