বর্তমানে সরকারি স্কুল ছেড়ে ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট স্কুলে যাওয়ার চল বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিভাবকদের মনেও গেঁথে রয়েছে, যে সরকারি স্কুলে ঠিক করে পড়াশোনা হয়না। এই চিন্তাভাবনা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে সরকারি স্কুলের পরিকাঠামোগত অপূর্ণতা, শিক্ষক শূন্যতা এবং পড়াশোনার মানের হ্রাস। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বেসরকারি স্কুলগুলি তাদের ফি বাড়াচ্ছে কোনও নিয়ম না মেনেই। গত বৃহস্পতিবার বিড়লা ভারতী গার্ডিয়ানস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের দায়ের করা একটি অভিযোগ অনুযায়ী বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল হঠাৎ করে স্কুলের ফি ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে।
বিড়লা ভারতী গার্ডিয়ানস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের মামলার ভিত্তিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু পশ্চিমবঙ্গের শিশুদের বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষা বিধিমালা, ২০১২-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যে, রাজ্য সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া বেসরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠানগুলি ছাত্রদের ফি কাঠামো বৃদ্ধি করতে পারে না। এই প্রসঙ্গে বেসরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠান নিজেদের পক্ষ নিয়ে বলেন যে, বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষা বিধিমালা, ২০১২ অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত এই নিয়ম প্রযোজ্য। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন যে, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত, ফি বৃদ্ধি করতে হলে আপনাকে আগে থেকে অনুমোদন নিতে হবে এবং আপনাকে আইন মেনে চলতে হবে।
কলকাতা হাইকোর্ট বলেছে যে বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধি রাজ্য সরকারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, কিন্তু বেসরকারি স্কুলগুলি মাঝে মাঝেই এই নিয়ম মেনে চলে না। এছাড়া কাউন্সিল ফর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এক্সামিনেশনস (সিআইএসসিই) এর মতামত অনুযায়ী বেসরকারি স্কুলগুলিকে ফি বাড়ানোর আগে রাজ্য থেকে অনুমতি নিতেই হবে। বিচারপতি বসু স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলেন, আপনি যদি রাজ্য সরকারের নিয়ম মেনে না চলেন তাহলে আপনার স্কুলের অ্যাফিলিয়েশন বাতিল করা হবে। তিনি আরও কড়া ভাষায় সমালোচনা করে বলেন যে, আপনি নিজের নিয়মে নিজের মত করে স্কুল চালাতে পারেননা, আপনাকে স্কুল চালাতে হলে সরকারি নিয়ম মেনেই চালাতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হয় ৯ ফেব্রুয়ারি।