এবার থেকে আর স্কুলে শুধু ইংরাজি নয়, স্কুলে পড়াতে হবে বাংলাও। বেসরকারি স্কুলেও বাংলার পড়াতেই হবে। অর্থাৎ আমার সন্তানের বাংলাটা ঠিক আসে না। এটা বলার দিন শেষ। এবার সমস্ত স্কুলে বাংলা পড়ানো আবশ্যিক করছে সরকার।
রাজ্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে এনিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারপরই রাজ্যের শিক্ষানীতির অনুমোদন হয়েছে। সেই শিক্ষানীতিতেই স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাংলা ও ইংরেজি দুটি ভাষাই পড়াতে হবে রাজ্যের স্কুলগুলিতে। অর্থাৎ ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল বলে সেখানে কেবলমাত্র ইংরেজি পড়ানো হবে, সেখানে বাংলার কোনও বালাই নেই এমনটা নয়।
এখানেই শেষ নয়, ইংরেজি বাংলার পাশাপাশি তৃতীয় ভাষা হিসাবে কোনও আঞ্চলিক ভাষা পড়ানো যেতে পারে।
এদিকে এই ভাষা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই একটা দ্বন্দ্ব ছিল। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যেত বাংলার একাধিক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে বাংলা পড়ানোর কোনও বালাই নেই। কিছুক্ষেত্রে নম নম করে নিয়ম রক্ষার জন্য় বাংলা পড়ানো হয়। কিন্তু সেই ভাষা কার্যত গুরুত্বহীন হয়ে থেকে যায়। তবে এবার আগের সেই অলিখিত নিয়ম থেকে কিছুটা পিছু হঠছে সরকার। এবার ইংরেজি মাধ্য়ম স্কুলেও গুরুত্ব দিয়ে বাংলা পড়াতেই হবে।
তবে কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষানীতিতেও মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কিছুদিন আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এনিয়ে জোরালো সওয়াল করেছিলেন। জুলাই মাসের শেষের দিকে দিল্লিতে অখিল ভারতীয় শিক্ষা সমাগমের সূচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় শিক্ষানীতির তিনবছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই উদ্যোগ। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, নতুন সম্ভাবনার জন্ম দেয় ভারতবর্ষ। একাধিক দেশ আইআইটি ক্যাম্পাস তৈরির জন্য ভারতকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মাতৃভাষায় এই যে শিক্ষাদান এটা ভারতের পড়ুয়াদের ন্যায় বিচার দিয়েছে। এটা সামাজিক ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে একটা উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
কার্যত প্রধানমন্ত্রী মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন। তিনি জানিয়েছিলেন, যারা ভালো করে ইংরাজি বলতে পারেন না তাদের চিরদিন অবহেলা করা হয় ও তাদের প্রতিভার স্বীকৃতি পায় না। তার জেরে বহু গ্রামীণ এলাকার পড়ুয়ারা চিরদিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটা ঠিক নয়। এখন ভারত জাতীয় শিক্ষানীতির পথে চলছে। এমনকী রাষ্ট্রসংঘেও আমি ভারতীয় ভাষায় কথা বলেছি। জানিয়ে দিলেন মোদী।
তবে এবার বাংলায় কার্যত মাতৃভাষায় শিক্ষাদান ইস্যুতে মোদীর পথেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাই বলছেন অনেকে।