শুভব্রত মুখার্জি: চলতি এশিয়া কাপে কি বেশি সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে ভারত, পাকিস্তানকে? ব্যবসায়িক স্বার্থ দেখতে গিয়ে কি বাবর আজম, বিরাট কোহলিদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে? বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হচ্ছে সুপার ফোরের বাকি দুই দেশ শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে? অন্ততপক্ষে সরাসরি না হলেও তাদের কোচদের কথাতে কিন্তু সেইরকম ইঙ্গিত ধরা পড়ছে। শ্রীলঙ্কাতে আবহাওয়ার যা পূর্বাভাস সেই অনুযায়ী ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে প্রায় ৯০ শতাংশ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এখনও। ফলে বৃষ্টিতে ভেস্তে যেতে পারে ম্যাচ। এই ভাবনা থেকেই ১০ সেপ্টেম্বরের এই ম্যাচে যোগ করা হয়েছে রিজার্ভ ডে। পাশাপাশি একই ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচেও। অথচ এই দুই দেশের ম্যাচের জন্য রাখা হয়নি কোনও রিজার্ভ ডে। পাশাপাশি দুই দেশের সঙ্গে কোনও রকম কোনও আলোচনাই বিষয়টি নিয়ে হয়নি। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুই দেশের হেড কোচ।
শ্রীলঙ্কার কোচ ক্রিস সিলভারউড বিষয়টি নিয়ে বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, ‘সত্যি বলছি আমি কিছুটা হলেও অবাক হয়েছি (একমাত্র ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচেই রিজার্ভ ডে থাকায়)। আমি যখন প্রথম বিষয়টি শুনি আমি খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবছিলাম আমি ঠিক শুনছি তো! তবে আমরা তো আর টু্র্নামেন্টের আয়োজক নয়। আমরা খেলতে এসেছি। তাই আমরা এই বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি কিছুই করে উঠতে পারব না। সত্যি বলছি এই বিষয়টি কাউকে অন্যায়ভাবে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার সমান। এটা তখন সমস্যার কারণ হবে যদি এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে কোনও একটি দল পয়েন্ট তুলে নেয় এবং পরবর্তীতে বিষয়টি আমাদের ফলাফলের উপর প্রভাব ফেলে।’
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরেসিংহে জানিয়েছেন, ‘আমি নিশ্চিত প্রতিটি দেশ থেকে প্রতিনিধি নিয়ে তৈরি করা একটি টেকনিক্যাল কমিটি আছে। ছয়টি দেশেরই লোক আছে ওখানে। তারা নিশ্চয়ই কোনও কারণে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হ্যাঁ, এটা আদর্শ সিদ্ধান্ত নয়। আমরাও একটা অতিরিক্ত দিন পেলে খুশি হতাম। এর বাইরে আমার খুব বেশি কিছু বলার নেই, কারণ তারা সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার তা নিয়ে নিয়েছে। এটাকে বদলানোর ক্ষমতা আমাদের নেই।’
হাথুরেসিংহে আরও বলেন, ‘যখন আপনি একবার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন, তখন আসলে খুব বেশি কিছু বলার থাকে না। যদি আগে আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হতো বিষয়টি নিয়ে তাহলে আমরা কিছু একটা বলার জায়গায় থাকতাম। অবশ্যই বলতে পছন্দ করতাম। যেহেতু ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে তাই আমি খুব বেশি চিন্তা করছি না। আমরা শুধু সেটাই করব, যা করতে বলা হবে। আমি এরকম কিছু অন্য টুর্নামেন্টে আগে দেখিনি। এটা প্রথমবার অভিজ্ঞতা হল। টুর্নামেন্টের মাঝখানে এমন নিয়ম বদলে ফেলা আমার কাছে নতুন।’
প্রসঙ্গত শ্রীলঙ্কার পাল্লিকেলেতে হওয়া তিনটি ম্যাচেই বাধ সেধেছে বৃষ্টি। ভারত ও পাকিস্তান ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও বাকি দুটি ম্যাচে ফলাফল সম্ভব হয়েছে । যদিও নেপালের বিপক্ষে ভারতের ম্যাচটির দ্বিতীয় ইনিংস কমিয়ে আনা হয়েছিল ২৩ ওভারে। পাল্লিকেলের মতো বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলম্বোতেও। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে আগামী এক সপ্তাহে শ্রীলঙ্কায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। প্রতিদিনই ৮০-৯০ শতাংশ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দিনের তুলনায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে রাতের দিকে। ফলে বেশিরভাগ ম্যাচেই বৃষ্টি আয়োজকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতেই পারে।