আর হাতে দু’দিন। শনিবার গ্রামবাংলা জুড়ে শুরু হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। কিন্তু তার আগে নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত দিলেন একদা সিপিএমের বেতাজ বাদশা লক্ষ্মণ শেঠ। সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করেছিল। তারপর সেখান থেকে বিজেপি এবং তৃণমূলে ঢুকতে না পেরে অবশেষে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ। সদ্য তিনি নতুন বিয়েও করেছেন। তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে কম চর্চা হয়নি। আর দু’দিন পরই গ্রামবাংলা জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। ঠিক তার প্রাক্কালে কংগ্রেস প্রার্থী যেখানে থাকবে না, সেখানে বামেদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানালেন প্রদেশ কংগ্রেসের সহ–সভাপতি লক্ষ্মণ শেঠ।
এদিকে সুতাহাটার চৈতন্যপুরে কংগ্রেসের হলদিয়া মহকুমা নির্বাচনী সভায় উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মণ শেঠ। সেখানেই নয়া সমীকরণ তুলে ধরে সিপিএমকে ভোট দেওয়ার আবেদন করেন তিনি। এই সিপিএম থেকে তাঁকে বিতাড়িত হতে হয়েছিল। সেই সিপিএমকে ভোট দেওয়ার কৌশলগত অবস্থান নিয়ে নতুন করে গুঞ্জন দানা বেঁধেছে। ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকারের অবসান হওয়ার পর তাঁরও সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ মেজাজ কমে গিয়েছে। নানা দলে ঘুরে এখন তিনি কংগ্রেসে। তবে তিনি যে এখনও শেষ হয়ে যাননি সেটা বুধবারের নির্বাচনী সভা থেকে আবার একবার বোঝানোর চেষ্টা করেন লক্ষ্মণ শেঠ।
ঠিক কী বলেছেন লক্ষ্মণ শেঠ? অন্যদিকে সর্বত্র জোট হয়নি বাম–কংগ্রেসের। তাছাড়া বিজেপি এখন আস্ফালন দেখাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বহু আসেন জিতে বসে রয়েছে। এই আবহে নির্বাচনী সভা থেকে লক্ষ্মণ শেঠ পুরনো মেজাজে বলেন, ‘এটা ভাববেন না যে সিপিএম থেকে চলে এসেছি বলে তাদের শেষ করে দিতে চাই। আমি চাই বামপন্থীরা এবং কংগ্রেস শক্তিশালী হোক। তার মধ্য দিয়েই ভারতে পরিবর্তন আসবে। গ্রামবাংলায় দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত তৈরি করতে বাম–কংগ্রেসকে শক্তিশালী হওয়া দরকার। আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সরকারকে উৎখাত করতে এখন থেকেই আপনাদের তৈরি হতে হবে।’
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু যুবকের, সিপিএম প্রার্থীর লাগল গুলি, আলোড়ন
ঠিক কী বলছে তৃণমূল কংগ্রেস? লক্ষ্মণ শেঠের কথায় গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুপ্রকাশ গিরি বলেন, ‘লক্ষ্মণ শেঠদের কথার কোনও মূল্য নেই। ৩৪ বছর সিপিএমের শাসনে ওঁর নেতৃত্বে মানুষ শোষিত হয়েছে। উনি বিজেপিকে ভোট দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলেননি এটাই ভাগ্য ভাল। তলায় তলায় তিন দলের অশুভ আঁতাত হয়েছে। আসলে এরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে ভয় পেয়ে নানা কথা বলছে। তবে এতকিছুর পরও জিতবে তৃণমূলই।’