পঞ্চায়েত নির্বাচন তো গ্রামবাংলার ভোট–উৎসব। তাহলে কলকাতা পুলিশের প্রস্তুতি কেন? এই প্রশ্ন অনেকের মধ্যেই উঁকি দিচ্ছে। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচন গ্রামবাংলার ভোট উৎসব হলেও নজরদারি এবং পুলিশ ফোর্স দিতে হয় লালবাজারকেও। বিভিন্ন থানায় ফোর্স প্রস্তুত করে তাদের কাজে লাগানো হয়। কারণ বিস্তীর্ণ গ্রামবাংলার নির্বাচনে শুধু রাজ্য পুলিশ দিয়ে করা সম্ভব নয়। কিন্তু এবার পঞ্চায়েত নির্বাচন তো কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হচ্ছে। তাহলে কলকাতা পুলিশের প্রয়োজনীয়তা কী? কেন্দ্রীয় বাহিনী গ্রামবাংলার ভৌগোলিক বিষয়টি জানে না। তাঁদেরকে বুথ থেকে শুরু করে পথ–ঘাট চিনিয়ে দিতে হয়। তবে তাঁরা নিরাপত্তা দেন। তাই কলকাতা পুলিশকেও প্রস্তুত থাকতে হয়। এই কাজ করার জন্য।
আগামী ৮ জুলাই এক দফায় রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে কলকাতা হাইকোর্ট যদি দফা বাড়ানোর নির্দেশ দেয় তাহলে পরিবর্তন হবে। এই পরিস্থিতিতে শহরের একাধিক থানা পরিদর্শন করলেন কলকাতার নগরপাল (সিপি) বিনীত গোয়েল। লালবাজার থেকে বেরিয়ে কলকাতার একাধিক থানার অফিসারদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পুলিশ কমিশনার। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এই থানা পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়েন। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স (কেএলসি) থানা–সহ একাধিক থানায় তিনি যান বলে সূত্রের খবর। তবে তারপর তিনি এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখও খোলেন।
তারপর ঠিক কী ঘটল? পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে থানার পুলিশকর্মী এবং অফিসারদের সঙ্গে সিপি দেখা করেন। তারপর এলাকায় কেমন পরিস্থিতি রয়েছে তা নিয়ে বিস্তর খোঁজখবর করেন। এমনকী পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল উল্টোডাঙা, টালা, কাশীপুর–সহ একাধিক থানাতেও সারপ্রাইজ ভিজিট করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এইসব থানার অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজ নেন নগরপাল। নাগরিকরা পুলিশের পক্ষ থেকে পরিষেবা পাচ্ছেন কিনা, সেটাও জানতে চান সিপি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় দক্ষিণ থেকে উত্তর ২৪ পরগনা সংলগ্ন কলকাতা পুলিশ এলাকায় বাড়তি নজরদারির গুরুত্ব দিচ্ছে লালবাজার। নজরদারি, টহলদারি থেকে পুলিশ দিয়ে সাহায্য করতে হয় কলকাতা পুলিশকে। তাই এমন সারপ্রাইজ ভিজিট।
আরও পড়ুন: খোদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর জেলায় গোঁজ প্রার্থীর ছড়াছড়ি, মতুয়া ভোট বিভক্ত নিয়ে চিন্তা
ঠিক কী বলছেন পুলিশ কমিশনার? পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হওয়া থেকে মনোনয়ন পর্ব—সব ক্ষেত্রেই তেতে উঠতে দেখা গিয়েছিল ভাঙড়কে। এবার এই ভাঙড় লাগোয়া কলকাতা পুলিশের কেএলসি থানার কিছুটা অংশ পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তাই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কেএলসি থানার অন্তর্গত বামনঘাটা–সহ যে তিনটি এলাকা পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে সেখানে মোট ৬৯টি বুথ। তাই এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল সংবাদমাধ।মে বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য তৈরি কলকাতা পুলিশ। নজরদারি–টহলদারি চলছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’