ভোট যতই এগিয়ে আসছে ততই যেন অশান্তি আরও বাড়ছে। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে চলছে গুলি, পড়ছে বোমা, ঝরছে রক্ত। এই আবহে গতকাল সামশেরগঞ্জে এক কংগ্রেস কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আরও অভিযোগ, ঘটনার সময় সামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন সেখানেই। জানা গিয়েছে, গতকাল এই গুলি চালানোর ঘটনাটি ঘটেছে সামশেরগঞ্জের তিনপাকুরিয়ায়। গুলিবিদ্ধ কংগ্রেস কর্মীর নাম আরিফ শেখ। তাঁর তলপেটের বাঁ দিকে গুলি লেগেছে। এই আবহে ফের একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নবাবের জেলা। গুলিবিদ্ধ ওই কংগ্রেস কর্মীকে দ্রুত ধুলিয়ানের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে জঙ্গিপুর মহাকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। (আরও পড়ুন: প্লেনের টিকিট বাতিল করে ট্রেনে কলকাতায় ফিরলেন রাজ্যপাল, পথে বাসন্তীর নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ফোন)
জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ প্রচার সেরে ফিরছিলেন মুর্শিদাবাদ ৪ নম্বর জেলা পরিষদের আসনের কংগ্রেস প্রার্থী আনারুল হক। সেই একই সময় সেই রাস্তা দিয়ে উলটো দিক দিয়ে আসছিলেন সামশেরগঞ্জের বিধায়ক। অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় কংগ্রেস প্রার্থীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন বিধায়ক। তবে আনারুলের গায়ে গুলি লাগেনি। তাঁর সঙ্গে থাকা কংগ্রেস কর্মী আরিফ গুলিবিদ্ধ হন।
এদিকে তৃণমূল বিধায়কের উপস্থিতিতে এহেন ঘটনা ঘটায় তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছে হাত শিবির। যদিও এই গোটা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আমিরুল ইসলাম। সমশেরগঞ্জের বিধায়কের পালটা অভিযোগ, তাঁর ওপরই হামলা চালানোর চেষ্টা হয়েছিল। তাঁর দাবি, দলীয় কর্মসূচি শেষ করে তিনি ফিরছিলেন। সেই সময় নাকি দুষ্কৃতীরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। এমনকি গুলিও চালানো হয় তাঁকে লক্ষ্য করে। কংগ্রেসের অভিযোগকে 'অপপ্রচার' বলে আখ্যা দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলেন, 'দুষ্কৃতীদের হামলা থেকে কোনওক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে এসেছি।' তাঁর আরও অভিযোগ, এলাকায় কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
যদিও এই ঘটনাকে ঘিরে রাস্তায় নামে কংগ্রেস কর্মীরা। রাতেই সামশেরগঞ্জের পুরনো ডাকবাংলোর সামনের রাস্তা অবরোধ করেন কংগ্রেস কর্মীরা। থানা ঘেরাও করেও বিক্ষোভ দেখান তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিক্ষোভস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলামের অনুগামীদের গুলিতেই জখম হয়েছেন কংগ্রেসের আরিফ। এই ঘটনা ঘিরে আজ আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কংগ্রেস। এর আগে মনোনয়নের শেষ দিনে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে পিটিয়ে, গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। নবগ্রামের সেই ঘটনায় কংগ্রেস কর্মী, তৃণমূলের প্রার্থী-সহ ৪জন আহতও হয়েছিলেন। আর ভোটের মাত্র এক সপ্তাহ আগে ফের একবার রক্ত ঝরল মুর্শিদাবাদে।