পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট বাজার পর থেকেই 'সক্রিয়' হয়ে উঠেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শাসকদলের আপত্তি সত্ত্বেও হিংসা কবলিত ভাঙড়ে গিয়েছিলেন। সদ্য উত্তরবঙ্গ সফরেও যান তিনি। সেখানে রাজনৈতিক হিংসার শিকার কর্মী ও পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেই সফর শেষে আজ সকালে বিমানে করে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল রাজ্যপালের। তবে তিনি বিমানের টিকিট বাতিল করে ট্রেনে ফেরেন শহরে। বিমানে থাকলে বেশ কিছুক্ষণ ফোন বন্ধ রাখতে হবে, সেই কারণেই নাকি তিনি ট্রেনে যাত্রা করেন। এদিকে যাত্রাপথে তিনি বাসন্তীতে নিহত তৃণমূল কর্মীর শোকাহত পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বলে জানা গিয়েছে। মৃত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন আনন্দ বোস। (আরও পড়ুন: ফের রক্ত ঝরল মুর্শিদাবাদে, তৃণমূল বিধায়কের উপস্থিতিতেই কংগ্রেস কর্মীকে গুলি)
পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে হিংসার অভিযোগ জানানোর জন্য রাজভবনে ইতিমধ্যেই ‘পিস রুম’ খুলেছেন রাজ্যপাল। এর আগে অশান্ত ভাঙড় ও ক্যানিংয়ে গিয়ে এলাকা পরিদর্শন করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। সম্প্রতি আবার কোচবিহারে যান তিনি। দিনহাটায় নিহত দুই বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলে তৃণমূল। অভিযোগ ওঠে, মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেও তৃণমূল কর্মীদের দিকে নজর নেই রাজ্যপালের। এরপর রাজনৈতিক হিংসায় জখম তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে যান তিনি। গীতলদহে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত তৃণমূল কর্মী বাবু হকের বাড়িতেও গিয়েছিলেন তিনি। আর এবার নিরপেক্ষ থাকার বার্তা দিয়েই বাসন্তীতে মৃত তৃণমূল কর্মীর পরিবারকে ফোন করলেন রাজ্যপাল।
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে মাথায় গুলি করে খুন করা হয় জিয়ারুল মোল্লা নামে এক তৃণমূল কর্মীকে। বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছিল। জানা গিয়েছে, রাত ৯টা নাগাদ ক্য়ানিং থেকে বাড়ি ফিরছিলেন জিয়ারুল মোল্লা। তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে জিয়ারুলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এদিকে শাসকদল এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আইএসএফ-এর দিকে আঙুল তুলছে। যদিও বিরোধীদের পালটা অভিযোগ, এই ঘটনার নেপথ্য়ে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই দায়ী। এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এই খুন নিয়ে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লার দাবি, চারজন এসে জিয়ারুলকে গুলি করে খুন করেছে। জিয়ারুল দলের সক্রিয় কর্মী ছিল। পুলিশ তদন্ত করছে। আততায়ীদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি তোলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানান, দলও এই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে নিজেদের মতো।