প্রতিবারের মতো এবারও পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় জেলায় ডিউটিতে যাবে কলকাতা পুলিশ। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার পুলিশ ভোটের ডিউটিতে থাকবেন। অর্থাৎ বাহিনীর অর্ধেকই থাকবেন ভোটের ডিউটিতে। এরফলে স্বাভাবিকভাবেই শহরের নিরাপত্তা কেমন থাকবে তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এত সংখ্যক পুলিশ না থাকার ফলে নিরাপত্তায় কী ছিদ্র দেখা দেবে না? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বাহিনীর অর্ধেক কর্মী জেলায় চলে যাওয়ার কারণে শহরে রাস্তা পুলিশ শূন্য থাকার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি ট্রাফিক নিয়েও সমস্যা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও লালবাজারের তরফে হয়েছে এর ফলে কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু, তা সত্ত্বেও ভোটের কয়েকটা দিন নজরদারি খামতি থাকা নিয়ে আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটে নিচু পদে ডিউটি দেওয়া হয়েছে, অভিযোগে হাইকোর্টে ৭ অধ্যাপক
নির্বাচন কমিশন এবং কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে কলকাতার ১২০০০ পুলিশ কর্মী পাঠানো হবে। এই মর্মে কলকাতা পুলিশকে আগেই চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সেই চিঠি পাওয়ার পরে ১২ হাজার পুলিশ কর্মী ভোটের ডিউটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় লালবাজার। সেইমতো বুধবার থেকে বিভিন্ন জেলায় যেতে শুরু করেছেন পুলিশ কর্মীরা। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ হাজার পুলিশ কর্মীর মধ্যে রয়েছেন ১০ হাজার কনস্টেবল, এসআই এবং সার্জেন্ট রয়েছেন ৫০০ জন এএসআই রয়েছেন ১৫০০ জন। সব মিলিয়ে তাদের ভোটের ডিউটিতে থাকতে হবে ৪ দিন। ওই কয়েকদিন শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। থানা এবং ট্রাফিক গার্ডের পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগ সহ বিভিন্ন বিভাগ থেকে পুলিশ কর্মীদের তুলে নেওয়া হয়েছে ভোটের কাজে। এই অবস্থায় কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ কয়েক দিন কার্যত প্রায় ফাঁকা থেকে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে । এরফলে থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডের পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগ কী ভাবে চলবে সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও থানা থেকে আবার অর্ধেকেরও বেশি কর্মীকে ভোটের ডিউটিতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে কলকাতা পুলিশ বাহিনীতে সব মিলিয়ে প্রায় ২৪ হাজার পুলিশ রয়েছে। কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন বিভাগে কর্মীর ব্যাপক অভাব রয়েছে। কারণ গত কয়েক বছর ধরে নিয়োগ হয়নি। তাছাড়া, অনেকের পদোন্নতি হয়েছে। ফলে নিচু তলার কর্মী সংখ্যাও অনেক কম রয়েছে। এই অবস্থায় এত সংখ্যক পুলিশ ভোটের কাজে পাঠানো হলে বাহিনী কীভাবে চলবে তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের ডিউটিতে ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে রয়েছেন ২৫ টি ট্রাফিক গার্ডের ৮০ জন সার্জেন্ট। এছাড়াও রয়েছেন ২০০ জন এএসআই, ১৮০০ জন ট্র্যাফিক কনস্টেবল এবং ২০০০ হোমগার্ড। এই বিপুল সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ ভোটের ডিউটিতে থাকায় যান চলাচল ব্যহত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় সিভিক ভলেন্টিয়ারা দায়িত্ব সামলাবেন। তাছাড়া, ট্রাফিক গার্ডের ওসি এবং এসিরাও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে থাকবেন। অন্যদিকে, বর্তমানে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালের মাধ্যমে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে শহরে। এই অবস্থায় সেরকম সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন পুলিশের একাংশ।