দুটো বাসনের মধ্যে ঠোকাঠুকি হলে সে বাসন কি ফেলে দিতে হয়? বিদায়ী সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লার সঙ্গে দ্বন্দ্ব মিটতেই এই যুক্তি দিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা। প্রধানমন্ত্রী ধূপগুড়ি সফরের পর দিনই এই বরফ বার্তা এসেছে। জেলা বিজেপি জানিয়েছে মঙ্গলবার থেকেই টিগ্গার হয় প্রচারে নামছে বার্লা।
এদিন টিগ্গা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘দুটি বাসনের মধ্যে ঠোকাঠুকি হলে আমরা ফেলে দিই না। পাশপাশি রাখি। তেমন জনদাও আমার পাশে রয়েছেন। সংবাদমাধ্যম বেশি বাড়াবাড়ি করছে।’
‘পরিবার বড় হলে এমন হয়’
অন্যদিকে বার্লাও দাবি করেছেন, ‘পরিবার বড় হলে তু-তু ম্যায়-ম্যায় হয়। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আমরা সেটা মিটিয়ে নিয়েছি। ’
আলিপুরদুয়ারে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে টিগ্গার নাম ঘোষণা হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানাতে শুরু করেন জন বার্লা। এমনকি তিনি টিগ্গার হয়ে প্রচারে বেরোবেন না বলেও জানিয়ে দেন।
মার্চে কাওয়াখালিতে এবং এপ্রিলে কোচবিহাররে প্রধানমন্ত্রী সভায় টিগ্গার পাশে বার্লাকে দেখা গেলেও তিনি সেভাবে প্রচারে নামেননি। তবে কোচবিহারের সভার পর টিগ্গা জানিয়েছিলেন, বার্লার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। আগামী ১০ এপ্রিলের পর থেকে বার্তা তাঁর হয়ে প্রচার করতে শুরু করবেন। রবিবার মোদীর ধূপগুড়ির সভাতেও জলপাইগুড়ির প্রার্থী জয়ন্ত রায়ের সঙ্গে মনোজ টিগ্গাকেও ভোট দিয়ে আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন। কর্মরতা মায়েদের সুবিধায় ‘মোবাইল ক্রেচ’, সন্তানদের রেখে কাজে যান মায়েরা, কোথায় জানেন?
টিগ্গার সঙ্গে বৈঠক
এরপরই টিগ্গার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকের পর বিজেপি প্রার্থী জানান, মঙ্গলবার থেকে তাঁর সঙ্গে প্রচার শুরু করবেন বার্লা। বিদায়ী সাংসদের কথায়, ‘আমি এখনও এই এলাকার অভিভাবক। বিকশিত ভারত গড়তে মোদীজির ‘চারশো পার’-এর লক্ষ্যমাত্রা আমারও লক্ষ্য। সে জন্যই আলিপুরদুয়ারের পাশাপাশি কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীদের জয়ী করতে আমার প্রচার চলছে।’
আরও পড়ুন। দমদমে BJP প্রার্থীর সামনেই দলের কর্মীদের হাতাহাতি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল দাবি বিরোধীদের
কোন পথে গলল বরফ?
টিগ্গার হয়ে প্রচারে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী, দলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা দিল্লি থেকে ফোন করে টিগ্গাকে বার্লার বাড়ি যেতে বলেন। তার পরই বরফ গলে।
কী করবেন নীচুতলার কর্মীরা
তবে বিজেপির নীচু তলায় প্রশ্ন উঠছে, যেভাবে টিগ্গাকে প্রার্থী করার পর তিনি প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, সেই ‘ক্ষত’ কি সারিয়ে তোলা যাবে।
একই প্রশ্ন বিজেপির শ্রমিক সংগঠন বিটিডব্লিউইউ-এর একটা বড় অংশের মধ্যে। বার্লা সরে দাঁড়াতেই সংগঠনের একটা বড় অংশ প্রচার থেকে সরে দাঁড়ায়। এই পরিস্থিতিতে তারা কী করবে তা নিয়ে চর্চা চলছে। যদিও সংগঠনের দাবি, বিজেপিকে জেতাতে শ্রমিক সংগঠনের সব সদস্যারা প্রচার করবেন।
আরও পড়ুন। কেন্দ্রের ভোটে রাজ্যের সরকার পতনের পূর্বাভাস, লোকসভায় বাংলার ফল নিয়ে বড় দাবি শুভেন্দুর