জোরহাট লোকসভা কেন্দ্রটি অসমের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা কেন্দ্র। আসনটি বর্তমানে তফশিলি জাতি বা উপজাতির জন্য সংরক্ষিত নয়। ১৯৫২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এই লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন সংঘটিত হয়ে আসছে। সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে ভারতীয় জনতা পার্টির তপন কুমার গগৈ সাংসদ নির্বাচিত হন। আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই লোকসভা কেন্দ্র গুলির অন্তর্গত বিধানসভা কেন্দ্রগুলি। সোনারি, মহামারা, ডেমো, শিবসাগর, নাজিরা, মাজুলি, তেওক, জোরহাট, মারিয়ানী, তিতবর এই দশটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে জোরহাট লোকসভা কেন্দ্র গঠিত। এর মধ্যে মাজুলী কেন্দ্রটি এসটি অর্থাৎ তপশিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত।
এবার এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী গৌরব গগৈ। তিনি আগে অন্য কেন্দ্র থেকে সাংসদ ছিলেন। এই আসন থেকে জেতা নিশ্চিত ভাবেই একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলের সামনে। তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির বর্তমান সাংসদ তপন কুমার গগৈ। ১৯ এপ্রিল প্রথম পর্যায়ের জোরহাটে হবে ভোটগ্রহণ।
১৯৫২ এবং ১৯৫৭ সালে এই কেন্দ্র থেকে জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যথাক্রমে দেবেশ্বর সরমাহ ও মাফিদা আহমেদ সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬২ সালে এই কেন্দ্র থেকে প্রজা সমাজতান্ত্রিক পার্টির রাজেন্দ্রনাথ বড়ুয়া সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৭১ এবং ১৯৭৭-এর লোকসভা নির্বাচনে তরুণ গগৈ জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রে সংসদ হয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালে এই কেন্দ্রটি থেকে নির্দল প্রার্থী পরাগ চালিহা জয়ী হন৷ ১৯৯১ থেকে ২০০৯ পরপর ছ’টি লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজয় কৃষ্ণ হান্দিক এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। ২০১৪ এবং ২০১৯ -এর লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে যথাক্রমে কামাখ্যা প্রসাদ তাশা ও তপন কুমার গগৈ জয়ী হন। ২০১৯ এর লোকসভায় জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থীকে তপন কুমার গগৈ বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছিল।
আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল৷ জোরহাট কেন্দ্রটি থেকে বিজেপির প্রার্থী শীরেন্দ্রনাথ গোস্বামী বিধায়ক নির্বাচিত হন। মারিয়ানী, মহমারা, সোনারি কেন্দ্রগুলিতে বিজেপির প্রার্থীরা জয়যুক্ত হন। অন্যদিকে নাজিরা কেন্দ্রটিতে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী যথাক্রমে ভাস্কর জ্যোতি বড়ুয়া এবং দেবদ্রব সাইকিয়া জয়ী হন। শিব সাগর কেন্দ্রটিতে নির্দল প্রার্থী অখিল গগই জয়যুক্ত হন। এছাড়া তেওক কেন্দ্রটিতে অসম গণ পরিষদের প্রার্থী রেনুপমা রাজখোয়া জয়ী হন। সার্বিকভাবে লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের নিরিখে ভারতীয় জনতা পার্টি কিছুটা অ্যাডভান্টেজ পজিশনে থাকলেও জাতীয় কংগ্রেসেরও কিছুটা সমর্থন রয়েছে।
১০