কাজিরাঙা (পূর্ববর্তী কালিয়াবর) লোকসভা কেন্দ্রটি অসমের ১৪টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে একটি। এটি ২০২৩ সালের অগষ্টে সীমানা নির্ধারণের সময় নতুনভাবে তৈরি করা হয়েছিল। কালিয়াবর লোকসভা কেন্দ্রটি অসম রাজ্যের মধ্যভাগে অবস্থিত। এই লোকসভা কেন্দ্রটি নওগাঁ ও গোলাঘাট দুটি জেলা জুড়ে অবস্থান করছে৷ ১৯৬৭ সাল থেকে এই লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন শুরু হয়। এই লোকসভা কেন্দ্রটি দশটি বিধানসভা কেন্দ্রের সমন্বয়ে গঠিত। কেন্দ্রগুলি হল গোলাঘাট, দেরগাঁও, বোকাখাত, ধিং, বটদ্রবা, রূপহীহাট, সামাগুরি, কালিয়াবর, সরুপাথার, খুমটাই৷ এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলির সমন্বয়ে কালিয়াবর লোকসভা কেন্দ্র গঠিত।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে এই কেন্দ্রটি থেকে বর্তমানে সাংসদ রয়েছেন জাতীয় কংগ্রেসের গৌরব গগৈ। ১৯৬৭ সাল থেকে পরবর্তীকালে লোকসভা নির্বাচন গুলিতে এই কেন্দ্রতে কোন দল কেমন ফলাফল করেছিল, তা একনজরে দেখে নেওয়া যাক। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বেদব্রত বড়ুয়া ১৯৬৭ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৭১ এবং ১৯৭৭ সালেও তিনি এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে জাতীয় কংগ্রেসের বিষ্ণুপ্রসাদ এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে অসম গণ পরিষদের ভদ্রেশ্বর তাঁতি এই কেন্দ্রটি থেকে জয়ী হন। ১৯৯১ এর নির্বাচনে ফের তরুণ গগৈ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের লোকসভা নির্বাচনে অসম গণ পরিষদের কেশব মহন্ত জাতীয় কংগ্রেসকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ নির্বাচনে পরপর দু’বার তরুণ গগৈ জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রে জয়ী হন। ২০০৪ ও ২০০৯ সালর দীপ গগৈ, ২০১৪ সালে গৌরব গগৈ সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির মৃণাল কুমার শইকিয়ার ভোটের হার বৃদ্ধি পেলেও ৮ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন গৌরব গগৈ। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে গৌরব গগৈ ২ লক্ষ ৯০০ র বেশি ভোটে জয়ী হয়ে এই কেন্দ্রে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে এই কেন্দ্রের মোট ভোটার ছিল ১৬ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫১৩ জনের মধ্যে ৮৬.৬ শতাংশ মানুষ ভোটদানে অংশ নেন।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে নজর রাখা যাক৷ ২০২১ সালে বিজেপি মোট ৬০টি আসন পায়, যেখানে জাতীয় কংগ্রেস ২৯টি এবং ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ১৬ টি আসন পেয়েছিল। এছাড়াও অসম গণ পরিষদ ৯টি এবং ইউপিপিএল ৬টি আসন পায়। বিধানসভা কেন্দ্রটিতে অসম গণ পরিষদের কেশব মহান্ত জয়ী হয়েছিলেন ২৩ শতাংশের বেশি ভোটে। বোকাখাত কেন্দ্রটিতে অসম গণপরিষদের প্রার্থী অতুল বোরা ৪৫ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হন। গোলাঘাট বিধানসভা কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টি জয়ী হয়। রুপহীহাট কেন্দ্রে জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী নুরুল হুদা জয়ী হয়েছিলেন ১লক্ষের বেশি ভোটে। ধিং বিধানসভা কেন্দ্রে ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-এর আমিনুল ইসলাম ১ লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী হন। সামাগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে জাতীয় কংগ্রেসের রাকিবুল হোসেন জয়ী হন ২৬ হাজারের বেশি ভোটে। বটদ্রব কেন্দ্রটিতে শিবা মনিবোরা জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ৩২ হাজারের বেশি ভোটে জয়যুক্ত হয়েছিলেন।
সার্বিকভাবে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে এই কেন্দ্রটিতে বিজেপি বিরোধী দলগুলি অ্যাডভান্টেজ পজিশনে রয়েছে। জাতীয় কংগ্রেসের ফলাফল বেশ ভালো লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে। এবার বিজেপির হয়ে লড়ছেন কামাক্ষ্যা প্রসাদ তাসা। অন্যদিকে কংগ্রেসের হয়ে ময়দানে আছেন রসলিনা তিরকে। ১৯ এপ্রিলে এই আসনে ভোট হবে। ফলাফল ঘোষিত হবে ৪ জুন।