সেই সোনালি দিন আর নেই। রাজপাটও গিয়েছে বাংলা থেকে। ত্রিপুরাতেও ক্ষীণ হয়েছে লালপার্টির শক্তি। টিমটিম করে জ্বলছে শুধুমাত্র কেরলে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ক্ষয়িষ্ণু শক্তি, তলানিতে থাকা সংগঠন নিয়ে নেমে পড়েছে সিপিএম। যেখানে সারা দেশে তাঁদের তেমন কোনও প্রভাব নেই। এই আবহে এবার দেখা যাচ্ছে, গত পাঁচ দশকে এবারের লোকসভা নির্বাচনে সব থেকে কম আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে সিপিএম। আর সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ইস্তেহার প্রকাশ করে জানান, এবারের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ৫০টির মতো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর এটা বোঝা যাচ্ছে যে, এককভাবে সিপিএম সর্বত্র লড়াই করার মতো শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি। তবে নতুন কয়েকটি কথা তাঁদের ইস্তেহারে তুলে ধরা হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ’র বিরোধিতা, ইউএপিএ ও ইডি’র আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইন পিএমএলএ’র মতো ‘অমানবিক’ আইন প্রত্যাহারের কথা বলেছে সিপিএম। জম্মু–কাশ্মীরকে বিশেষ অধিকার ফেরানো, নির্বাচনী সংস্কার, রাজ্যপাল নিয়োগ করার ক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত তিনজনের প্যানেল থেকে একজনকে নিয়োগের পক্ষে সওয়াল করেছে সিপিএম। তাতে কতটা ভোট আসবে সেটা অবশ্যই ভাববার বিষয়।
আরও পড়ুন: রাতে বাড়তি পানীয় জল সরবরাহ করছে নিউ ব্যারাকপুর পুরসভা, গরমে খুশি আমজনতা
তবে পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৭৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ৫৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রত্যেকটি লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ৬৩ থেকে ৬৪টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। ১৯৯৬ সালে সেটা বেড়ে যায়। সিপিএম ৭৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ৯৩টি আসনে লড়াই করেছিল। এমনতী ৯টি আসনে জিতেছিল সিপিএম। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ৬৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। সেখানে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ৫০টির মতো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। যা ক্ষয়িষ্ণু সংগঠনের বার্তা দিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে সিপিএম ইস্তেহার প্রকাশ করে কেন্দ্রের বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গঠনের ডাক দিয়েছে। যার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। কারণ ২০০৪ সালে ইউপিএ সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল সিপিএম। সেই নির্বাচনে ৬৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৪৩টি আসন জিতেছিল। তার পর থেকে সিপিএমের শক্তি শুধু ক্ষয়ই হয়েছে। যার জেরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ৬৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৩টি আসন জিতেছিল। এবার সেটাই আরও তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে। সিপিএম বাংলায় এখনও ১৯টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কেরলে সিপিএম এবার ১৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ত্রিপুরাতেও বিরাট কোনও ভাল ফল হবে বলে মনে করছে না সিপিএম।