২০১৬ সালের এসএসসির সমস্ত নিয়োগ আজ, সোমবার বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রায় ২৪ হাজার চাকরিরতদের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ৩৮১ পাতার রায়দান করে কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের নিয়োগ বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায়ের পর বড় চিন্তায় পড়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
কেন চিন্তায় পড়ল কমিশন? এই ঘটনার খবর নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের কানেও গিয়েছে। আর তাতেই কমিশনের কর্তাদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে যাঁদের চাকরি গেল, তাঁরা কি ভোটের ডিউটি করতে রাজি হবেন? নির্বাচন কমিশন এবার কাদের দিয়ে ডিউটি করাবেন? এই প্রশ্নগুলিই কপালে ভাঁজ ফেলেছে নির্বাচন কমিশনের অফিসারদের। এখানে একটা বিষয় হল, কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কে বেআইনি বলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন সুপ্রিম কোর্ট যদি স্থগিতাদেশ দেয় তাহলেই দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগে দরজা খুলতে পারে। তা না হলে বিষয়টি সত্যিই চাপের বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। সুতরাং অপেক্ষা করতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘যোগ্য প্রার্থীদের কথা ভাবা হল না’, অনামিকা রায়ও এবার চাকরিহারা হয়ে গেলেন
তবে সুপ্রিম কোর্ট যদি কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে দেরি করে তাহলে প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি ঝুলেই থাকবে। এদিকে বাংলায় দ্বিতীয় দফার ভোট আছে ২৬ এপ্রিল। তার মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট কোনও নির্দেশ না দিলে নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এই ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের মধ্যে ১২ হাজার ৯৪৬ জন সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি পেয়েছিলেন। নবম–দশম শ্রেণির ক্ষেত্রে শিক্ষক পদে নিয়োগপত্র পান ৫ হাজার ৭৫৬ জন। গ্রুপ–সি পদে ২ হাজার ৬৭ এবং গ্রুপ–ডি পদে ৪ হাজার ৫৫০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। এবার এদের কি হবে সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: অভিষেকের বাড়ি–অফিস রেইকি করে মুম্বই হামলার জঙ্গি, গ্রেফতার করল লালবাজার
অন্যদিকে শিক্ষক–অশিক্ষক কর্মীদের নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা হয়। এটা অনেক দিন থেকেই হয়ে আসছে। সহকারি শিক্ষকদের প্রিসাইডিং অফিসার পদে কাজ করানো হয়। এমনকী গ্রুপ–সি এবং গ্রুপ–ডি কর্মীদের ভোট কর্মী হিসাবে কাজে লাগানো হয়। তবে এই ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের মধ্যে কতজনের নির্বাচনের ডিউটি পড়েছিল সেই পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখছে নির্বাচন কমিশন বলে সূত্রের খবর। সুতরাং দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের চারদিন আগে চাপ বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। তাই নির্বাচনের কাজে এখন নতুন জটিলতা তৈরি হল। এখান থেকে এখন বেরতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘যে ভোটকর্মীরা আছেন, তাঁদের বেশ কিছু অংশ শিক্ষক–শিক্ষিকা রয়েছেন। কিন্তু আমাদের মোট যত সংখ্যক ভোটকর্মী থাকেন, সেক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ভোটকর্মী রাখা থাকে। যদি কিছু ভোটকর্মী আসতে না পারেন, সেক্ষেত্রে রিজার্ভ থেকে দেওয়া হবে।’