তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছে জঙ্গি বলে খবর। তাঁর বাড়ি রেইকি করেছিল মুম্বই হামলার মূলচক্রী বলে বড় তথ্য প্রকাশ্যে আনল কলকাতা পুলিশ। এই ঘটনায় যুক্ত হয়েছে রাজারাম রেগের নাম। এই রাজারাম রেগ কলকাতায় আসে। শেক্সপিয়ার সরণির একটি হোটেলে ওঠে সে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পিএ’র মোবাইল নম্বর জোগাড় করেছিল বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর। আজ, সোমবার এই অভিযুক্তকে মুম্বই থেকে গ্রেফতার করেছে লালবাজার। এমনকী তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।
এদিকে ভিডিয়োগ্রাফি করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স সূত্রে খবর, রাজারাম রেগের আর একটা বড় পরিচয় সে একসময় শিবসেনা নেতা ছিল। ২৬/১১ মুম্বই হামলার তদন্তে তার নাম উঠে আসে। এই হামলার অন্যতম চক্রী ডেভিড হেডলির শিকাগোতে যখন বিচার চলছিল তখন তিনি বলেছিলেন, রাজারাম রেগে শিবসেনা নেতা। তার সঙ্গে শিবসেনা ভবনের বাইরে তিনি দেখা করেছিলেন। এমনকী তিনি চেয়েছিলেন লস্কর–ই–তৈবার মুম্বই হামলায় এই রাজারাম রেগেকে কাজে লাগাতে। তখন থেকেই রাজারাম রেগের নাম মুম্বই হামলার ঘটনায় উঠে আসে। এই রাজারাম অভিষেকের আপ্তসহায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তার পরই অভিষেকের বাড়ির সামনে থেকে ঘুরে যায়।
আরও পড়ুন: ‘যোগ্য প্রার্থীদের কথা ভাবা হল না’, অনামিকা রায়ও এবার চাকরিহারা হয়ে গেলেন
অন্যদিকে রাজারাম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনেও রেইকি করেছিল বলে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার পর অভিষেকের নিরাপত্তা আরও নিশ্ছিদ্র করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রীরও। সম্প্রতি নির্বাচনী জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপি ডেঞ্জারাস দল। ওরা আমাকে খুন করার ষড়যন্ত্র করছে। অভিষেককেও টার্গেট করা হয়েছে। কিন্তু ওইসব ষড়যন্ত্রকে আমরা কেয়ার করি না। তারপরই এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ হেডলিকে রাজারাম আশ্বাস দিয়েছিল, সে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করিয়ে দেবে। তবে ঠিক কী কারণে এই রেইকি করেছিল রাজারাম সেটা জানতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এছাড়া অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ষড়যন্ত্র করেছিল রাজারাম বলে জানতে পারেন লালবাজারের কর্তারা। এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘আমরা জানতে পারি একজন মুম্বই থেকে এসে এখানে কিছুদিন থাকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পিএ’র নম্বর জোগাড় করে। বাড়ির আশেপাশে রেইকিও করে। তাঁর নাম রাজারাম রেগে। ২৬/১১ মুম্বই হামলার সময় ডেভিড হেডলি যখন ভারতে আসে তখন সে হেডলিকে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার উপর রেইকি করতে সাহায্য করেছিল। তাই তাকে পুলিশের একটি দল মুম্বই থেকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে আসে।’