লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ক্যানিং। তৃণমূল–বিজেপির সংঘর্ষে ব্যাপকভাবে জখম হয়েছেন দু’পক্ষের প্রায় সাতজন কর্মী। এঁদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের তিনজন এবং চারজন বিজেপি কর্মী বলে দু’দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। আহতরা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর লোকসভা নির্বাচনের আগেও উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের জীবনতলা। মাঠেরদিঘি এলাকায় বিজেপির কর্মীসভায় হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পালটা তৃণমূল কংগ্রেসের উপর হামলা করেছে বিজেপি বলেও অভিযোগ উঠেছে। সুতরাং রণক্ষেত্র গোটা এলাকা।
এদিকে ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার অন্তর্গত জীবনতলা থানার মাঠেরদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে। পুলিশ সূত্রে খবর, আজ রবিবার তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে একে অপরের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়ে পড়ে। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি এবং দলের আরও এক কর্মীকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁদের কর্মীদেরকে মারধরের অভিযোগ এসেছে। এই বিষয়ে বিজেপির জয়নগর সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সর্দারের অভিযোগ, সরকারি অনুমতি নিয়ে জীবনতলার মাঠেরদিঘি এলাকায় কর্মীসভা চলছিল। সেখানে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ঢুকে পড়ে এবং বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশকে হামলার কথা জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত মুসলিমদের উপর শর্ত চাপালেন হিমন্ত, স্বদেশি তকমা পেতে কী করতে হবে?
অন্যদিকে এই ঘটনার জেরে আহত বিজেপির দুই কর্মীকে ক্যানিং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে সুব্রত দাস বিজেপির মণ্ডল সভাপতির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তৃণমূল কংগ্রেসের দু’জন আহতকে চিকিৎসার জন্য চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে। হামলা করার অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বরং তাঁদের উপরই হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক শওকত মোল্লা বলেন, ‘আমাদের দলীয় কর্মীরা মোটরবাইকে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তখন বিজেপির কর্মীরা কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করে। সেখান থেকেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। অশান্তির জেরে আমাদের কয়েকজন কর্মীও জখম হয়েছেন।’
এছাড়া এই ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় যায় ক্যানিং মহকুমা পুলিশ অফিসার রামকুমার মণ্ডলের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশের হস্তক্ষেপেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তদন্তে নেমেছে ক্যানিং থানা। বিজেপির জয়নগর সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সর্দার বলেন, ‘সরকারি অনুমতি নিয়ে ওই এলাকায় বিজেপি কর্মীসভার পরিকল্পনা করেছিল। আর সেখানেই তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা আক্রমণ চালিয়েছে।’ লোকসভা নির্বাচনের আগে এই অশান্তিকে কেন্দ্র করে থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়েছে।