লোকসভা নির্বাচনে হুগলির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকে জোর প্রচারে নেমেছেন অভিনেত্রী–প্রার্থী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। এখানের বিদায়ী সাংসদ। এমন নির্বাচনী আবহে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দল নিজে চোখেই দেখেছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজনীতির আঙিনায় পা দিয়ে প্রথমবারেই সাফল্য এল। খুব সুন্দরভাবে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটালেন তিনি। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় ম্যানেজও করলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন এখানেও তিনি দিদি নম্বর ওয়ান। পরিবারে যেমন সমস্যা থাকে, স্বামী–স্ত্রীর ঝগড়া হয়, বৌদি–ননদের মনোমালিন্য হয়, দলও তেমনই। তাই সেখানেও সমস্যা হতেই পারে। এভাবেই দলকে পরিবারের মধ্যে বাঁধলেন হুগলির প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই টার্নিং পয়েন্ট করতে চাইছেন। যদিও তাঁর দলের কর্মীরাই তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার দিয়েছেন। সুতরাং এই ইস্যু খুব একটা কাজে লাগবে না বুঝছেন তিনি নিজেও। তাই এখন বিজেপি প্রার্থী বলছেন, ‘এখানে আমিই জিতব। তৃণমূল প্রার্থীকে বিজেপিতেই আসতে হবে। ওনার প্রাক্তন স্বামী পদ্মফুলেই এসেছেন।’ হুগলিতে বিজেপির অন্দরে যেমন সমস্যা আছে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তেমন ভুগিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকেও। বিশেষ করে বলাগড় বিধানসভায়। এই বিষয়ে কি সচেতন তৃণমূল কংগ্রেসের তারকা প্রার্থী? রচনার ব্যাখ্যা, সমস্যা আছে এবং থাকবে। তৃণমূল কংগ্রেসেও আছে। কিন্তু শেষ কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। সুতরাং সমস্যা তাঁর কাছে বড় নয়।
আরও পড়ুন: ক্যাডবেরি সেলিব্রেশন নিয়ে সুজয়ের বাড়িতে জুন, প্রার্থীর মুখে চা ধরলেন জেলা সভাপতি
অন্যদিকে এই সমস্যা প্রকাশ্যে আসায় নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে দিদি নম্বর ওয়ানকে। তবে হুগলির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তাতে বিচলিত নন। বরং রচনার প্রশ্ন, ‘কোন জায়গায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই? সব জায়গায় সমস্যা আছে। পরিবারের মধ্যেও তো কত সমস্যা থাকে। স্বামী–স্ত্রীতে সমস্যা, ননদ–বৌদিতে সমস্যা। সমস্যা সব জায়গায় থাকে। এত বড় একটা দল। হাতের পাঁচটা আঙুল কি সমান হয়? প্রত্যেকের আলাদা চিন্তাভাবনা থাকে। কিন্তু ওই অসমান আঙুলগুলি এক হলে একটা মুঠি তৈরি হয়। আর সেটা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বন্দ্ব সব দলেই আছে। আমাদের দলেও আছে। তবে আমাদের লক্ষ্য বিজেপিকে পরাস্ত করা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা এক হয়ে লড়াই করব। আর সব মিটিয়ে নেব।’
এভাবে দলের সবাইকে এক জায়গায় নিয়ে এসে বুঝিয়ে দিলেন এসব ইস্যু বিজেপি কাজে লাগাতে পারবে না। হুগলির বলাগড়ে এসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কেমন করে বেড়েছে তার হিসাব সবার সামনে তুলে ধরলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। সোমবার বলাগড় বিধানসভার চন্দ্রহাটিতে ভোট প্রচারে হুগলির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বলেন, ‘ওষুধ–সহ প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বাড়ছে। আগে ৫০০ টাকায় ঝোলাভর্তি বাজার করা যেত। এখন একটা ছোট প্যাকেটে সে বাজার হয়। মানুষের দৈনন্দিন জীবন চালানো সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপর আরও কত বাড়বে। আগে ডালের দাম ছিল ৪০ টাকা কেজি। এখন ১৩০ টাকা কেজি। আদার দাম ছিল ৫০ টাকা। এখন ১৫০ টাকা। পেট্রল আগে বিক্রি হতো ৭০ টাকায় এখন ১২০ টাকা। কেরোসিন ছিল ৪০ টাকা। এখন ১০০ টাকা।’