চা শ্রমিকদেরও মিলবে পাট্টা জমি। যেখানে অবস্থান সেখানেই জমির পাট্টা পাবেন তাঁরা। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে জনসভা থেকে এই কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার চা–জমি নীতি নিয়ে এভাবেই রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন তিনি। এই কথা শুনে খুশি চা–বাগানের সঙ্গে জড়িত কৃষকরা। চা–বাগানে পাট্টা দেওয়ার ঘোষণা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু তাতে সময় লেগে যায় জমি সংক্রান্ত বিষয়ে। এবার সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে বলেই চূড়ান্ত সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। আর এটা বাস্তবায়িত হলে চা–শ্রমিকদের বড় উপকার হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে চা–শ্রমিকদের দাবি ছিল, তাঁরা যেখানে বাস করেন সেখানে পাট্টা দিতে হবে। তাতে অনেক উপকার হবে। প্রশাসন সমীক্ষা করার পর বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দেয়। তবে চা–মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়েছিল। যে জমি বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে লিজে আছে সেখানে কেমন করে পাট্টা হবে? প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। আর নির্বাচনী জনসভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চা–বাগানে পাট্টা দিচ্ছি। সবাই পাবেন। লাইনের লোকেরা যাঁরা যে যেখানে আছেন সেখানে পাবেন। আমি তো চা–বাগানের পোশাক পরে চা পাতা তুলি, চা বানাই, আদিবাসী মেয়েদের সঙ্গে নৃত্যও করি, রাজবংশী সংস্কৃতিও ভালবাসি। সবই যদি আমরা করি, আপনি এসে কী করবেন মোদীবাবু?’ এখন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন চা–শ্রমিকরাও।
আরও পড়ুন: দুর্গাকে খুনের পর মুণ্ড নিয়ে তন্ত্রসাধনা! ওয়াটগঞ্জে বাড়ির ঠাকুরঘরে তদন্তে ফরেনসিক
অন্যদিকে মোদীর গ্যারান্টিকে তুলোধনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোরাধ্যায়। ছোট চা–চাষিদের কেন্দ্রের টি–বোর্ডের নয়া রাসায়নিক কীটনাশক বিধিতে বিপাকে পড়তে হয়েছিল। চা–কারখানাগুলি ছোট চা–চাষিদের থেকে চা–পাতা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করে টি–বোর্ডের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠকে সমাধানসূত্র বের করেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘বিজেপির গ্যারান্টি হচ্ছে শূন্য। এখনও পর্যন্ত কিছু করেছে? দশ বছর বিজেপি জিতেছে। চা–বাগানের দশ লক্ষ শ্রমিকের রোজগার বন্ধ করে দিয়েছিল। পাতা তোলা বন্ধ করে দেন। আমি খুলে দিয়েছি। দশ লক্ষ শ্রমিককে সাহায্য করেছি। ছোট চা বাগানের ১০ লক্ষ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে শুনে আমি সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে জানালাম। কাজ শুরু হয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রচারে বেকায়দায় পড়ে যায় বিজেপি। কারণ এটা ঘটেছে ঠিকই। কিন্তু কাজ বন্ধ থেকে খোলার ক্ষেত্রে বিজেপির ভূমিকা দেখতে পায়নি মানুষজন। তবে এই বিষয়ে বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ তথা এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী জয়ন্ত রায় বলেন,‘পুরো বিষয়টাই হাস্যকর। টি–বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাসায়নিক কীটনাশক ছাড়া চা উৎপাদন হবে। তার জন্য ছোট চা–বাগানগুলিকে দু’বছর সময় দিয়েছে। কেন্দ্রে আমাদের মন্ত্রীরা টি–বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে এই নিয়ে সমাধানসূত্র বের করেছেন।’