আজ, শুক্রবার শুরু হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ পর্ব। প্রথম দফায় বাংলার মাটিতে তিনটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে ভোটগ্রহণ চলছে। আর তার মাঝেই মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার কৃষক বাজার ময়দানের জনসভা থেকে একযোগে সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী আবু তাহের খানের সমর্থনে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানে তৃতীয় দফায় অর্থাৎ আগামী ৭ মে মুর্শিদাবাদে ভোট রয়েছে। আজ হরিহরপাড়ার জনসভা শেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাবেন জঙ্গিপুরে। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী খলিলুর রহমানের সমর্থনে সভা করবেন। তার পর সেখান থেকে শনিবার যাবেন মালদায়।
এদিকে ইন্ডিয়া জোট তৈরি হয়েছে সর্বভারতীয় স্তরে। বাংলায় তা হয়নি। বরং কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলায় জোট করেছে সিপিএম। তাতে আখেরে সুবিধা করতে চাইছে বিজেপির। এই কথাই সুর সপ্তমে তুলে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দেশে ২০০টি আসনও পাবে না বিজেপি। সব সমীক্ষা ভুয়ো। লক্ষ লক্ষ টাকা ঢেলে সমীক্ষা করিয়েছে। ওতে কান দেবেন না। মানুষের চোখ বলছে, বিজেপি জিতবে না। কেউ কেউ বলছে, আমরা ‘ইন্ডিয়া’, আমাদের ভোট দিন। ‘ইন্ডিয়া’ এখানে নেই। ওটা দিল্লির। আমিই তৈরি করেছি। কংগ্রেস, সিপিএম এখানে ‘ইন্ডিয়া’ নয়। ওরা বিজেপি করে।’
আরও পড়ুন: ‘ভোট দিতে গেলে হাত–পা কেটে নেব’, শীতলকুচিতে বিজেপি কর্মীকে হাঁসুয়ার কোপ
অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনকেও তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার সঙ্গে বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএমকে ভোট না দেওয়ার আবেদন করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘যার বিয়ে এখানে সেই পুরোহিত। এটা প্রথম দেখছি। কী করে রাজ্যের পুলিশকে পুরো বাদ দিয়ে আপনারা শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাচ্ছেন? যাতে মানুষজন ভোট দিতে না পারে। সিপিএম–কংগ্রেসকে একটা ভোট দেওয়ার মানে বিজেপিকে দুটো ভোট দেওয়া। একটা ভোটও দেবেন না। আমি মিথ্যা কম বলি। সংসারে শান্তি বজায় রাখার জন্য যেটুকু প্রয়োজন সেটুকুর বাইরে মিথ্যা বলি না। রাজনীতিতে তাই আমি টিকে আছি। কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয় না। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি। ৫০ দিনের কাজ করতে পারবেন। কেউ চাইলে ৬০ দিনও করতে পারেন।’
এরপর আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়া জোটের প্রসঙ্গে ফিরে আসেন। আগামী দিনে এই ইন্ডিয়া জোটকে তিনিই নেতৃত্ব দেবেন বলে আজ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘কেন্দ্রের বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’কে আগামী দিনে আমারাই নেতৃত্ব দেব। তবে বাংলায় সিপিএম এবং কংগ্রেস বিজেপির দালালি করে। তাই এখানে ওদের সমর্থন করব না। দরকার হলে না খেয়ে থাকব তবু বাংলায় এনআরসি করতে দেব না। জীবন বাজি রেখে বলছি, আমার জীবন থাকতে এনআরসি করতে দেব না। পরিযায়ী শ্রমিকেরা যাঁরা রমজানে বাড়ি এসেছেন তাঁরা ভোট না দিয়ে নড়বেন না। ভোট না দিলে আধার কার্ড থেকে আপনার নাম বাদ দিয়ে দেবে। সিএএ, এনআরসি করে নাম ঢুকিয়ে দেবে। গত ১০ বছরে একটাও কাজ করেনি বিজেপি।’